নিখোঁজ বিমানের খোঁজে -কৃ বু

নিখোঁজ বিমানের খোঁজে -কৃ বু

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

মালয়েশিয়ান বিমান ‘এমএইচ৩৭০’। কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে ৮ মার্চ ২০১৪ সালে ২৩৯ যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। আজ অবধি তার কোনো হদিশ মেলেনি। প্রধানত দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে লক্ষ লক্ষ বর্গকিলোমিটার জুড়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলে। বিমানটির চূড়ান্ত অবস্থান সম্পর্কে এপর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। বিগত ন বছর ধরে বিমান অন্বেষণে প্রথাগত পদ্ধতিই অবলম্বন করা হয়েছিল । কিন্তু তাতে আশানুরূপ ফল মেলেনি। খোঁজ পর্ব এখনও জারি রয়েছে। তবে এবার বিমান অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচনে উন্নত প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছেন গবেষকরা। এই প্রচেষ্টায়, কৃ বু (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) তাদের প্রাথমিক ভরসা।

স্যাটেলাইট ট্রান্সমিশন, সমুদ্রের স্রোত এবং পূর্ববর্তী অনুসন্ধানের এলাকাগুলি থেকে বিশাল তথ্যভাণ্ডার প্রস্তুত হয়েছে। সেই বিরাট তথ্যভাণ্ডার বিশ্লেষণ করা মানুষের পক্ষে বেশ কঠিন। কৃ বু-চালিত অ্যালগরিদম-ই তথ্য বিশ্লেষণে ভরসা। মানুষের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে এমন প্যাটার্নও সনাক্ত করতে পারবে কৃ বু। প্রচলিত কম্পিউটিং পদ্ধতিতে জটিল গণনা সম্পন্ন করতে সময় লাগত বছরের উপর। এখন গণনার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংও ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করা যায়, এই উন্নত প্রযুক্তি গবেষকদের বিমানটির সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে আরও সঠিক আভাস দিতে পারবে। আইবিএম কোয়ান্টাম রিসার্চ টিম এ বিষয়ে একটি প্রকল্প শুরু করেছে। প্রকল্পটিতে বেসরকারি মহাকাশ সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক তদন্ত দলগুলির সাথে কাজ করছে। গবেষকদের সাথে বিমানটির শেষ যোগাযোগের সূত্র ধরে কোয়ান্টাম মডেলগুলি বিভিন্ন সিমুলেশন তৈরি করছে। এই সিমুলেশনগুলি বিমানের সম্ভাব্য অবস্থান নির্ধারণে আরও নির্ভুল আভাস দিতে পারবে। গবেষণাটিতে কেবলমাত্র তথ্য বিশ্লেষণেই যে কৃ বু প্রাধান্য পাচ্ছে তা নয়। সমুদ্রের তলদেশের চিত্র সংগ্রহে উন্নত সেন্সরযুক্ত কৃ বু-চালিত ড্রোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ড্রোনের সাহায্যে সমুদ্রের তলদেশে, উচ্চ-রেজোলিউশন ম্যাপিং করা সম্ভব হবে। পূর্ব-প্রযুক্তির তুলনায় এই ড্রোনগুলি গভীরতর সামুদ্রিক এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারবে, সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নতুন তথ্য প্রদান করতে পারবে। ড্রোন-বহরটি আগামী বছরের শুরুর দিকে, দূরবর্তী দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে অভিযান শুরু করবে। ফলত, ‘এমএইচ৩৭০’ বিমানের চূড়ান্ত গতিপথ সম্পর্কে, পূর্বে অলক্ষ্যে থাকা বহু বিবরণ উঠে আসবে, আশা করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − seven =