নিয়ান্ডারথালরাও আলকাতরা তৈরি করেছিল- জানাচ্ছে গবেষণা

নিয়ান্ডারথালরাও আলকাতরা তৈরি করেছিল- জানাচ্ছে গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঠিক কত বছর আগে নিয়ান্ডারথালরা পৃথিবীর বুকে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, তা নিয়ে আজও ধোঁয়াশা রয়েছে। যদিও সবচেয়ে পুরনো যে নিয়ান্ডারথালের সময়কার অনুরূপ দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে, তা খ্রিস্টপূর্ব ৪ লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগেকার। তা সত্ত্বেও যুগবিভাগ নিয়ে স্পষ্ট ধারণা করা যায়নি। আবার, অসংখ্য মানবজীবাশ্ম থেকে নিয়ান্ডারথালদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে বেশ কিছু রয়েছে যা খ্রিস্টপূর্ব ১ লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগেকার। অনেকের দাবি, খ্রিস্টপূর্ব ১ লক্ষ ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার বছরের মধ্যে নিয়ান্ডারথালদের অস্তিত্ব ছিল। তার পরের সময় থেকে তাদের অস্তিত্ব সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় না বলে দাবি। সম্প্রতি এক নতুন গবেষণা দাবি করে জিব্রাল্টারে, সমুদ্রের ধারে উত্তাল বাতাস থেকে বাঁচতে একটি গুহায়, আমাদের প্রাচীন আত্মীয়রা আগুন ব্যবহার করে আশপাশের গাছপালা থেকে আলকাতরা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল।
পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে নিয়ান্ডারথাল প্রজাতিরা অস্ত্র তৈরির জন্য আঠা হিসাবে আলকাতরা ব্যবহার করেছিল। শুধু তাই নয় উত্তাপ ও রান্নার জন্যও তারা আগুন ব্যবহার করত। সম্প্রতি কোয়াটারনারি সায়েন্সে প্রকাশিত এক রিভিউতে রিপোর্ট করা হয়েছে, নিয়ান্ডারথালরা আলকাতরা তৈরির জন্য উনুনের মতো বিশেষ ধরনের আগুনের এক কাঠামো বা কুণ্ড তৈরি করেছিল। গবেষকের দল নিয়ান্ডারথালদের গুহায় বালি, কাদামাটি এবং পলির স্তরে একটি ছোটো গর্ত খুঁজে পেয়েছেন। তারা মনে করছেন এটি প্রায় ৬৫০০০ বছর আগেকার। তারা গর্তে কাঠকয়লা, পরাগ এবং খানিকটা রাসায়নিক যৌগ দেখতে পান। তাদের মতে এই রাসায়নিক যৌগ উদ্ভিদ থেকে নির্গত রজন ও কিছু হলুদ কেলাস পুড়িয়ে তৈরি হয়েছিল এবং সম্ভবত সেটি আলকাতরা হতে পারে। গবেষকদের ধারণা এই প্রজাতি গাম রকরোজের (সিস্টাস লাডানিফার) রজন থেকে আলকাতরা তৈরি করেছিল। সাধারণত এই গাছ আশপাশের এলাকায় ঝোপঝাড়ে খুঁজে পাওয়া যেত। গবেষকরা তাদের ধারণার উপর ভিত্তি করে চকমকি পাথর এবং অলিভ উড থেকে দুটি বর্শা তৈরি করার জন্য উপযুক্ত পরিমাণে আলকাতরাও তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। অধ্যয়নটি বুঝতে সাহায্য করে যে নিয়ান্ডারথাল প্রজাতিটি সম্ভবত আলকাতরা তৈরির জন্য আরও জটিল এবং দক্ষ পদ্ধতিও ব্যবহার করে থাকতে পারে।