নীল রঙের ব্যাঙের দেখা মিলল অস্ট্রেলিয়ায়

নীল রঙের ব্যাঙের দেখা মিলল অস্ট্রেলিয়ায়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৭ জুলাই, ২০২৪
ব্যাঙ

প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার নিদর্শন আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। তারই ছোঁয়া রয়েছে ব্যাঙেদের জগতেও। নানা রঙের ব্যাঙ, যেমন তাদের রূপ, তেমনই বিষধর। এমন প্রজাতি এ দেশে সচারচর না মিললেও বিরল নয়। অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা এক অদ্ভুত নীল রঙের গেছো ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন। খাতায় কলমে এই ব্যাঙের নাম রাখা হয়েছে লিটোরিয়া স্প্লেন্ডিডা। গবেষকদের ধারণা ব্যাঙটি অ্যাক্সানথিজম নামের এক বিরল জেনেটিক মিউটেশনের ফল। এই পরিব্যক্তির ফলে ব্যাঙের ত্বকের হলুদ রঞ্জক পদার্থ তার কাজ করার ক্ষমতা হারায়। গেছো ব্যাঙের গায়ের সবুজ রঙ আসে হলুদ ও নীল রঞ্জক পদার্থের সংমিশ্রণে। হলুদ রঞ্জক পদার্থ কাজ না করায় ব্যাঙগুলো হয়ে যায় নীল রঙের। এটি একধরনের বিরল মিউটেশন। বলা যেতে পারে প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা। তাই গেছো ব্যাঙগুলো আর সবুজ রঙের হয় না, হয় নীল। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার কিম্বারলিতে একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এই বিরল মিউট্যান্ট উভচর প্রাণীটির প্রথম দেখা পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার অনুসারে, গেছো ব্যাঙ সাধারণত সবুজ রঙের, আর পিঠে থাকে সাদা দাগ। এরা প্রায় ৪ ইঞ্চি মতো লম্বা। মাথার দিকে পয়জেন গ্ল্যান্ড বা বিষ গ্রন্থি থাকে। এই তিক্ত বিষ দিয়ে তারা নিজেদের রক্ষা করে, শিকারীদের থেকে, বড়ো বড়ো উভচর প্রাণী, সরীসৃপ, পাখি ও বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীদের থেকে। গেছো ব্যাঙেদের আয়ু প্রায় ২০ বছর। উত্তর কিম্বার্লি অঞ্চল এবং কাছাকাছি উত্তর অঞ্চল জুড়ে কম বৃষ্টিপাতের এলাকায় এদের সচরাচর দেখা যায়। তবে এই গেছো ব্যাঙটির ত্বকের রঙ নীল। গবেষকরা যে ছবি তুলেছেন তাতে দেখা গেছে ব্যাঙটির মাথার দিকে রয়েছে জলপাই সবুজ রঙের বিষ গ্রন্থি। ব্যাঙের পিঠের দিকে সাদা দাগ রয়েছে আর পায়ের পাতার ডগার দিকে হলুদ টো-প্যাড। নীল রঙের এই ব্যাঙ আকারে বেশ বড়ো, প্রায় ৪.৭ ইঞ্চি লম্বা, আর তার বয়স বেশ কয়েক বছর হতে পারে। তবে গবেষকদের ধারণা এরা সবুজ গেছো ব্যাঙেদের মতো গাছপালার সবুজের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে না, শিকারীরা এদের সহজেই ধরে ফেলে।