নীল রঙের হ্রদ সবুজ বা বাদামি হয়ে যাচ্ছে, কেন?

নীল রঙের হ্রদ সবুজ বা বাদামি হয়ে যাচ্ছে, কেন?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ মার্চ, ২০২৩

কিছু নয়নাভিরাম নীল হ্রদ হয়তো ভবিষ্যতে নীল রঙের থাকবে না। সৌজন্যে, পৃথিবীর জলবায়ু সংকট।
ডালাসের সাদার্ন মেথোডিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবিশারদ জিয়াও ইয়াং ও তাঁর সহকারী গবেষকরা পৃথিবীব্যাপী বিভিন্ন হ্রদের জলের রঙ নিয়ে অভিনব এক তালিকা প্রস্তুত করেছেন। দেখা গেছে সারা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ হ্রদের রং নীল। কিন্তু গ্রীষ্মকালের গড় তাপমাত্রা মাত্র কয়েক ডিগ্রি বেড়ে গেলেই, জলের রঙ ঘোলাটে সবুজ অথবা বাদামি রঙের হয়ে যাবে। জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস পত্রিকায় সম্প্রতি বেরিয়েছে এই গবেষণাপত্র।
হ্রদের জলের রঙ পাল্টে গেলে, কেমনভাবে মানুষ ঐ জল ব্যবহার করে সেটাও বদলে যাবে। হ্রদের বাস্তুতন্ত্রের স্থায়িত্ব বোঝা যেতে পারে জলের রঙের পরিবর্তন লক্ষ্য করে। জলে ঠিক কী কী উপাদান আছে, সেটা যেমন জলের রঙ নির্ধারণে প্রধান বিষয় তেমনই চারপাশের মাটির প্রকৃতি কেমন অথবা জলের গভীরতা কতটা – এই বিষয়গুলোও কিছুটা হলেও জরুরি। যেমন নীল হ্রদের তুলনায় সবুজ বা বাদামি হ্রদে শৈবালের উপস্থিতি বেশি থাকে। অন্যান্য জৈব পদার্থের উপরেও নির্ভর করে জলের রঙ কেমন হবে।
পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে গরমকালে উষ্ণতা ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে কম থাকে, সেখানে হ্রদের জলের রঙ নীল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু অপেক্ষাকৃত উষ্ণ এলাকায় হ্রদের রঙ মোটেই এমনটা হয় না। কিন্তু বিজ্ঞানীদের গণনা বলছে, বিশ্বব্যাপী ১৪% হ্রদ সংকটের সীমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রীষ্মের গড় তাপমাত্রা আর ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই সেই ৩৮০০টা হ্রদের জলের রঙ পাল্টে সবুজ বা বাদামি হয়ে যাবে। কারণ উষ্ণতর জলে শৈবালের বংশবৃদ্ধি অধিক হারে হয়, ফলে জলের বৈশিষ্ট্যও অনেকটা পাল্টে যায়।