ন্যানোপার্টিকেল থেরাপি ধমনীকে রক্ষা করে

ন্যানোপার্টিকেল থেরাপি ধমনীকে রক্ষা করে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৭ অক্টোবর, ২০২৪

হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে, আমাদের ধমনীতে রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে চলবে না, ধমনীর দেয়াল হতে হবে প্রদাহ-মুক্ত। সম্প্রতি গবেষকরা কার্বন ন্যানো পার্টিকেল ব্যবহার করে এমন এক নতুন কৌশল আবিষ্কার করেছেন যা ধমনীতে বিপজ্জনক প্লেক তৈরির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। ফ্যাটযুক্ত উপাদান, কোলেস্টেরল, মৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত কোশ ধীরে ধীরে ধমনীর দেয়ালে জমা হয়ে দেয়াল পুরু, শক্ত করে দেয় ও রক্ত চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই প্রক্রিয়া এথেরোস্ক্লেরোসিস নামে পরিচিত। নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে কীভাবে গবেষকরা এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন। মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের নেতৃত্বে শুয়োরের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। শরীরের ইমিউন কোশগুলোকে সক্রিয় করার জন্য মানুষের চুলের চেয়ে পাতলা ন্যানো পার্টিকেলের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে ওষুধ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে বিজ্ঞানীরা। এর ফলে ধমনীতে এথেরোস্ক্লেরোসিসের সমস্যা হ্রাস পেয়েছে। পিইটি বা পজিট্রন-এমিশন টমোগ্রাফি স্ক্যান ব্যবহার করে, গবেষকরা শূকরের ধমনীতে থেরাপির প্রভাব পরিমাপ করেছেন। ন্যানো পার্টিকেল থেরাপির মাধ্যমে এফেরোসাইটোসিস নামক একটি প্রক্রিয়া পুনরায় সক্রিয় হয়, এবং ইমিউন সিস্টেমের মাধ্যমে ধমনী থেকে প্লেক সৃষ্টিকারী মৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত কোশ পরিষ্কার করা হয়। পূর্বে একই কৌশল ইঁদুরের ক্ষেত্রে সফল হয়েছে এবং এই সর্বশেষ গবেষণায় কিছু আশাব্যঞ্জক উন্নতিও দেখা গেছে। ধমনী পুরু হয়ে যাওয়ার ফলে হার্টের সমস্যা বা হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। তাই এর ঝুঁকির মাত্রা কমানোর দিকে বিজ্ঞানীদের নজর দেওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতে এথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধ করা বা এর গতি ধীর করার ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন প্রয়োজন। সঙ্গে প্রতিদিন স্বাস্থ্যচর্চা করতেই হবে। এই প্রধান সমস্যাটি মোকাবিলা করতে বর্তমানে গবেষকরা মানুষের উপর ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য এই ন্যানো পার্টিকেল এজেন্টগুলো প্রস্তুত করার উপায় বের করার চেষ্টা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × three =