
রাটগার্স–নিউ ব্রান্সউইক -এর ক্যাথরিন বার্মিংহামের নেতৃত্বে এক সাম্প্রতিক গবেষণা, পৃথিবীতে জলের আগমনের ব্যাপারে বিদ্যমান তত্ত্বগুলিকে চ্যালেঞ্জ করেছে । এই গবেষণায় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, জল আগের মান্যতাপ্রাপ্ত ধারণার চেয়ে অনেক পরে পৃথিবীতে এসেছিল – পৃথিবীর গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে , প্রাথমিক পর্যায়ে নয়। পৃথিবীর শিলার মধ্যে থাকা আইসোটোপ বিশ্লেষণ করে এবং উল্কাপিণ্ডগুলির সাথে তাদের তুলনা করে, গবেষকরা জলের আগমনের সময় এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে নতুন ধারণা অর্জন করেছেন।
বার্মিংহামের এই গবেষণা নির্দেশ করছে যে পৃথিবী ‘বিলম্বিত সঞ্চয়’ (late accretion) নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জল পেয়েছে। পৃথিবীর ভূত্বক এবং উল্কাপিন্ড উভয়ের মধ্যে পাওয়া উপাদান মলিবডেনাম-এর আইসোটোপ বিশ্লেষণ করা হয়েছিল ‘থার্মাল আয়নাইজেশন মাস স্পেকট্রোমেট্রি’ কৌশল ব্যবহার করে। জানা যাচ্ছে, পৃথিবীর শিলার মধ্যেকার মলিবডেনাম গঠনের সাথে সৌরজগতের শুষ্ক এলাকা থেকে আসা উল্কা পিন্ডগুলির নিবিড় মিল আছে। এই সন্ধানটি প্রস্তাব দিয়েছে যে পৃথিবী নির্মাণের প্রাথমিক উপাদানগুলি, প্রধানত এমন একটি অঞ্চল থেকে এসেছে যেখানে জল কম ছিল। এ প্রস্তাব এই জনপ্রিয় তত্ত্বটিকে চ্যালেঞ্জ করে যে পৃথিবীর জলের একটি বড় পরিমাণ অংশ এসেছিল চাঁদের গঠনের সময়। এর পরিবর্তে, এই নতুন গবেষণাটি জানাচ্ছে, জল পৃথিবীর গঠনের পরবর্তী পর্যায়গুলিতে অল্প অল্প পরিমাণে এসেছিল।
পৃথিবী বাসযোগ্য হয়ে উঠতে কত সময় লেগেছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এই গবেষণা। অন্য গ্রহগুলির বিকাশ বোঝার ক্ষেত্রেও এই গবেষণা কাজে লাগতে পারে। যদি পৃথিবীতে জল দেরিতে এসে থাকে, তাহলে জীবন-বিকাশের অনুকূল শর্তগুলি তৈরি হবার জন্য আগের ধারণার চেয়ে হয়তো বেশি সময় লেগে থাকতে পারে। এই গবেষণাটি পৃথিবীর অতীত বোঝার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিক উপস্থাপন করেছে ।
তথ্যসূত্রঃ https://www.earth.com/news/water-arrived-on-earth-gradually-not-in-one-big-event/