পৃথিবীর গতিতে বিভ্রাট

পৃথিবীর গতিতে বিভ্রাট

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৭ জুন, ২০২৩

পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষের ওপর নির্ভর করে দিন রাতের হিসেব। শুধু তাই নয়, ভরের ওপর বেশ কিছুটা নির্ভর করে কীভাবে ঘূর্ণন গতি বজায় থাকবে। বিজ্ঞানীদের একাংশ জানিয়েছেন, মানুষ মাটি থেকে এত বেশি জল পাম্পের মাধ্যমে তুলে নিয়েছে যা পৃথিবীর ঘূর্ণনকে প্রভাবিত করেছে। ১৯৯৩ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ঘূর্ণন গতি প্রায় ৪.৩৬ সেন্টিমিটার প্রভাবিত হয়েছে।
এর ফলে পৃথিবী প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার পূর্বে হেলে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা নতুন জলবায়ু মডেলের উপর ভিত্তি করে এমনটাই অনুমান করেছেন। জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, সেচের ফলে ভূগর্ভস্থ জল যেমন কমেছে একদিকে, অন্যদিকে, হিমবাহ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে রেকর্ড হারে। ফলে, প্রতি বছর ৪.৩৬ সেন্টিমিটার গতিতে ৬৪.১৬ ডিগ্রী পূর্বদিকে হেলেছে পৃথিবী।
গবেষকদের আন্তর্জাতিক দল অনুমান করেছে যে মানুষ ২১৫০ গিগাটন ভূগর্ভস্থ জল পাম্প করেছে। যা সমুদ্রপৃষ্ঠের ০.২৪ ইঞ্চিরও বেশি বৃদ্ধির সমতুল্য। এটি বোঝা গিয়েছে, পৃথিবীর ঘূর্ণন মেরুটি দেখে। ঘূর্ণন অক্ষকে কেন্দ্র করে পৃথিবী নিজের চারিদিকে ঘোরে। এর অর্থ হল পৃথিবীর ঘূর্ণন মেরুর অবস্থান পৃথিবীর বাইরের স্তরের সাপেক্ষে পরিবর্তিত হয়। আমাদের গ্রহে জল যেভাবে ভর নির্ধারণ করে সেটারই প্রভাব এটি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যদি একটি লাট্টুকে অল্প ওজন দিয়ে ঘোরানো হয় তাহলে সেটি যে অক্ষকোণে, যেভাবে ঘুরবে, সেটিকে যদি অতিরিক্ত ওজন দেওয়া হয় তাহলে এটি কিছুটা ভিন্নভাবে ঘুরতে শুরু করে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণন মেরুর পরিবর্তন হয়। জলবায়ু-সম্পর্কিত কারণগুলির মধ্যে, ভূগর্ভস্থ জলের পুনঃবন্টন আসলে ঘূর্ণন মেরুর প্রবাহের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছে যে বেশিরভাগ জল উত্তর আমেরিকা এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে জল পাম্প হয়েছে অতিরিক্ত হারে। যদিও এই মেরুর সামান্য স্থানবদলে ঋতুতে কোনও প্রবাহ পড়বে না এখনই। তবে আগামী দিনে রাত-দিনের হিসেব এবং আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসতেই পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + one =