পৃথিবীর ঘোরার ইতিহাস কেমন ছিল জানাবে বাইজেন্টাইনের সূর্যগ্রহণ

পৃথিবীর ঘোরার ইতিহাস কেমন ছিল জানাবে বাইজেন্টাইনের সূর্যগ্রহণ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ এমনিতেই বেশ নান্দনিক দৃশ্য। কার্যকারণ বোঝার আগে ইতিহাস জুড়ে সূর্যগ্রহণ নিয়ে কৌতূহল আর ধারণাও ছিল বিচিত্র রকমের। কিন্তু ঐতিহাসিক তথ্য যদি ঘাঁটা যায়, তাহলে আমাদের গ্রহের নড়াচড়া কীভাবে সময়ের সাথে পাল্টে গেছে, তাও বোঝা যেতে পারে।

সম্প্রতি এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অফ দ্য প্যাসিফিক নামের পত্রিকায়। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সময় ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলে চতুর্থ থেকে সপ্তম শতাব্দী জুড়ে সূর্যগ্রহণের লিপিবদ্ধ তথ্য খতিয়ে দেখেছেন জাপানি বিজ্ঞানীরা। এই নির্দিষ্ট কালখণ্ডে অদ্ভুতভাবে সূর্যগ্রহণের সংখ্যা বেশ কম। এই ইতিহাস ঘেঁটে গবেষকরা আন্দাজ করছেন কীভাবে পৃথিবীর ঘূর্ণনের নকশা যুগে যুগে অল্পবিস্তর বদলে গেছে।

নতুন এই গবেষণার কাজে যুক্ত ছিলেন সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কোজি মুরাতা। তিনি আক্ষেপ করে বলছেন, ঐ সময়ে যারা সূর্যগ্রহণ চাক্ষুষ করেছিলেন তাদের লেখাপত্র, উক্তি অনেকটাই ইতিহাসের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গবেষকরা চতুর্থ থেকে সপ্তম শতাব্দীর মধ্যে পাঁচটা গ্রহণের সঠিক সময় আর অবস্থান শনাক্ত করতে পেরেছেন। মুরাতা জানিয়েছেন ঐ পাঁচটা সূর্যগ্রহণ যথাক্রমে ৩৪৬, ৪১৮, ৪৮৪, ৬০১ আর ৬৯৩ খ্রিস্টাব্দের।

পৃথিবীর ঘোরার সাপেক্ষে ও নিরপেক্ষভাবে দু ধরণের সময় গণনা করা যায়। এদের ফারাককে ডেল্টা-টি বলে (ডেল্টা চিহ্ন দিয়ে পার্থক্যকে বোঝানো হয়)। এই ডেল্টা-টি সূচকের বৈচিত্র্য থেকে আমাদের গ্রহে দিনের প্রকৃত দৈর্ঘ্য জানা যায়।

৪১৮ সালের ১৯শে জুলাই কন্সট্যান্টিনপোলে সূর্যগ্রহণের প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। প্রাচীন লিপি অনুযায়ী এটা পূর্ণগ্রাস ছিল কারণ দিনের বেলাতেও আকাশে সব তারা পরিষ্কার দেখা গিয়েছিল নাকি। প্রোফেসর মুরাতা জানিয়েছেন, এর আগে এই গ্রহণের হিসেব থেকে পাওয়া ডেল্টা-টি মেনে নিলে কন্সট্যান্টিনপোল কিন্তু সূর্যগ্রহণের সঞ্চারপথের বাইরে চলে যায়। নতুন করে ডেল্টা-টি নির্ণয় করা হয়েছে।

এই গবেষণা থেকে শতকের সময়ের নিরিখে কীভাবে বদলেছে পৃথিবীর ঘোরার ছক, সেটা আরও স্পষ্ট হবে বিজ্ঞানী মহলের কাছে।