পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করার আগে আবিষ্কার গ্রহাণু

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করার আগে আবিষ্কার গ্রহাণু

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ মার্চ, ২০২২

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষের ঠিক ২ ঘণ্টা আগে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নজরে এসেছিল একটি গ্রহাণু (asteroid)। এমন ঘটনা যথেষ্ট বিরল। কারণ সাধারণত কোনও গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসার আগেই জানতে পারেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আর তাই অনেক আগে থেকেই সতর্কবার্তাও পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, ধেয়ে আসা গ্রহাণুর থেকে কোনও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে কিনা সেটাও জানিয়ে দেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই গ্রহাণুর ক্ষেত্রে তা হয়নি। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করার মাত্র দু’ঘণ্টা আগে প্রায় ৩ মিটার চওড়া এই গ্রহাণু আবিষ্কার করেছিলেন হাঙ্গেরির এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী। গত ১১ মার্চ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করেছিল এই গ্রহাণু। তার নাম দেওয়া হয়েছে ২০২২ ইবি৫ (2022 EB5)। উত্তর আইসল্যান্ডে প্রভাবও ফেলেছে এই গ্রহাণু। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ২০২২ ইবি৫ হল পঞ্চম গ্রহাণু যা পৃথিবীতে আঘাত হানার আগের মুহূর্তে আবিষ্কার হয়েছে। এর আগে যে চারটি গ্রহাণুর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটেছিল সেগুলি হল যথাক্রমে ২০১৪ এ৪, ২০১৮ এলএ, ২০০৮ টিসি৩ এবং ২০১৯ এমও।
হাঙ্গেরির যে জ্যোতির্বিজ্ঞানী এই গ্রহাণু আবিষ্কার করেছেন তাঁর নাম Krisztian Sarneczky। তিনি Piszkesteto মাউন্টেন স্টেশনে বসে এই গ্রহাণু আবিষ্কার করেছেন। বুদাপেস্টের কাছে রয়েছে Konkoly অবজারভেটরি। তারই অংশ এই Piszkesteto মাউন্টেন স্টেশন। তবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করলেও এই গ্রহাণু যে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে না সেটা আগেই বোঝা গিয়েছিল। এমনটাই জানানো হয়েছে Taarifa.com- এর রিপোর্টে। ওই রিপোর্ট অনুসারে আইসল্যান্ডের উত্তর ভাগের বাসিন্দাদের অনেকে একটা জোরে শব্দ শুনতে পেয়েছেন এবং আলোর ঝলকানি দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে ওই গ্রহাণুটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশে সময়ে ঠিক কী ঘটেছিল তা আরও ভালভাবে বোঝার জন্য International Meteor Organization আপাতত প্রমাণ খুঁজছে। জানা গিয়েছে, প্রতি সেকেন্ডে ১১ মাইল বা ১৮.৫ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছিল ওই গ্রহাণুটি।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে এই গ্রহাণু ধেয়ে আসার সময় এর সমস্ত অংশ বা অন্তত কিছুটা বাষ্প হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এর কারণ হল বাতাসের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল এই গ্রহাণুর। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সাথে ঘর্ষণের সময় ওই গ্রহাণুটি সম্ভবত একটি উজ্জ্বল উল্কা বা শ্যুটিং স্টার সৃষ্টি করেছে, যা প্রায়শই ফায়ারবল হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আইসল্যান্ডের কিছু বাসিন্দা দাবি করেছেন যে তাঁরা একটি উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি এবং জোরে একটা শব্দ শুনেছেন। আর তার জেরেই প্রমাণ খুঁজতে ব্যস্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক উল্কা সংগঠন বা International Meteor Organization। যদিও এখনও কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা উল্কার খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেই জানা গিয়েছে।