পেঁচার মতো রাতে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি মানসিক তীক্ষতার পরিচায়ক

পেঁচার মতো রাতে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি মানসিক তীক্ষতার পরিচায়ক

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৮ জুলাই, ২০২৪

আপনি কখন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন? দিনের বেলা নাকি সন্ধ্যের পর থেকে? আপনার কার্যক্ষম হয়ে ওঠার সাথে আপনার মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা, ও ঘুমের মধ্যে সম্পর্ক রেয়েছে। মস্তিষ্কের ওপর ঘুমের প্রভাবের তদন্ত করতে গিয়ে গবেষকরা দেখেছেন সকাল বা সন্ধ্যেতে কাজ করার ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির পছন্দের সাথে তাদের মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের একটা যোগসূত্র রয়েছে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা ২৬০০০ জনেরও বেশি লোকের তথ্য থেকে দেখেছিলেন যে ঘুমের বিভিন্ন দিক, যেমন আপনি কতক্ষণ ঘুমোলেন, আপনার ঘুমের ধরন ও ঘুমের গুণমান কীভাবে মানসিক তীক্ষ্ণতা এবং সামগ্রিক জ্ঞানীয় ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। বিএমজে পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত সমীক্ষায় দেখা গেছে যে রাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য সর্বোত্তম, এতে জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়ে। স্মৃতিশক্তি, যুক্তি এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সাত ঘণ্টার কম বা নয় ঘণ্টার বেশি ঘুমানো মস্তিষ্কের কার্যকারিতার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরীক্ষায় দেখা গেছে যারা সন্ধ্যাবেলা বেশি সক্রিয় তারা সকালে সক্রিয় ব্যক্তিদের তুলনায় ভালো স্কোর করেছেন। যারা সকাল বা রাতের তুলনায় মাঝামাঝি সময়ে বেশি কাজ করেন, তাদের স্কোর ভোর বেলায় কাজ করতে যারা স্বচ্ছন্দ তাদের তুলনায় কিছুটা বেশি ছিল। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য যারা দিনের বেলা কাজে অভ্যস্ত তারা কিন্তু প্রত্যেকে কম স্কোর করেননি। সন্ধ্যাবেলা কাজে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বেশি স্কোরের প্রবণতা দেখা গেছে।
এই বিশ্লেষণে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জীবনযাত্রার ধরন দেখা হয়েছিল, যেমন বয়স, লিঙ্গ, ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ, আবার হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের উপস্থিতিও দেখা হয়েছিল।। অল্প বয়স্ক ব্যক্তি, যাদের দীর্ঘস্থায়ী কোনো রোগ নেই তারা সাধারণত জ্ঞানীয় পরীক্ষায় বেশি স্কোর করেছেন। স্বাস্থ্যকর জীবনধারার সাথে উন্নত জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতার যোগ দেখা গেছে। আপনার স্বাভাবিক ঘুমের প্রবণতা বোঝা আর পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া সমান গুরুত্বপূর্ণ। এতে আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে আর তা সর্বোত্তমভাবে কাজ করার জন্য খুব জরুরি। গবেষকদের মতে ঘুমের ধরন সক্রিয়ভাবে চালনা করতে পারলে আমাদের মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে আর তা মস্তিষ্ককে সুরক্ষাও দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + 5 =