১৯৫০-এর দশকে, জিনতত্ত্ববিদ হ্যালডেন, বলেছেন, আফ্রিকার মানুষের শরীরে লোহিত রক্ত কণিকায় যে অস্বাভাবিকত্ব দেখা যায় তা ম্যালেরিয়ার হাত থেকে তাদের বাঁচতে সাহায্য করে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন হানি হয়। এই তত্ত্বের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বড়ো জনগোষ্ঠীর জিনতত্ত্ব অধ্যয়ন করে বোঝা যায় মূলত প্যাথোজেন মানুষের প্রধান শত্রুদের অন্যতম।
এখান থেকে একটা প্রধান প্রশ্ন উঠে আসে, যে বিভিন্ন সময়ে এক একধরনের প্যাথোজেন মানুষের জনগোষ্ঠীতে বড়ো রকমের আঘাত হেনেছে, তার ফলে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের অটোইমিউন ডিজ-অর্ডার বা মানুষের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে অনাক্রম্যতার অভাব দেখা গেছে কিনা।
ইমাজিন ইনস্টিটিউট এবং দ্য রকফেলার ইউনিভার্সিটি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) এর সহযোগিতায় ইনস্টিটিউট পাস্তুর, ইউনিভার্সিটি প্যারিস সিটি, সিএনআরএস এবং কলেজ ডি ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা প্যালিওজেনোমিক্সের উপর ভিত্তি করে এই প্রশ্নগুলির সমাধান করার প্রয়াস করেছেন।
প্যালিওজেনোমিক্স বিষয়টিতে জীবাশ্মের অবশেষ থেকে ডিএনএ অধ্যয়ন করা হয়। এই বিষয়টির মাধ্যমে মানুষ এবং মানুষের রোগের ইতিহাস এবং বিবর্তন সম্পর্কে বড়ো আবিষ্কার করা গেছে, যার ফলে 2022 সালের শারীরবিদ্যা বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার প্যালিওজেনেটিসিস্ট সোভান্তে পাবোকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৩ জানুয়ারী সেল জিনোমিক্স জার্নালে প্রকাশিত ইনস্টিটিউট পাস্তুরের গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা বিগত ১০ সহস্রাব্দব্যাপী ইউরোপে বসবাসকারী ২৮০০ টিরও বেশি ব্যক্তির জিনোমের পরিবর্তনশীলতা বিশ্লেষণ করেছেন। এই গবেষণা নিওলিথিক, ব্রোঞ্জ যুগ, লৌহ যুগ, মধ্যযুগ এবং বর্তমান যুগের সময়কাল ব্যাপী বিস্তৃত। এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, অতীতে যে সমস্ত অ্যালীল প্যাথোজেনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে পেরেছে, সেইসব অ্যালীলগুলো থেকে বর্তমানে অটো ইমিউন ডিজ-অর্ডার হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।