ফ্লোরাইডের বিকল্প এসে গেলো

ফ্লোরাইডের বিকল্প এসে গেলো

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ জুলাই, ২০২৩

দাঁত এবং হাড়ের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া উপাদান- ক্যালসিয়াম ফসফেট, দাঁতের গর্ত (বা ক্যারিস) থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে ফ্লোরাইডের মতোই কার্যকর হতে পারে, এমনটাই বলছেন বিজ্ঞানীরা। আমরা জানি ফ্লোরাইড দাঁতের সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকরী তবে অত্যধিক পরিমাণে ব্যবহার করলে ক্ষতিকারক হতে পারে। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য যারা তাদের টুথপেস্টের বেশিরভাগ অংশই খেয়ে ফেলে, তাই ছোটো বাচ্চাদের ব্রাশ করার সময় এক ফোঁটার আকারে টুথপেষ্ট চেপে দেওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা।
পোজনান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস এবং পোল্যান্ডের মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ বিয়ালস্টক-এর বিজ্ঞানীরা একটি নতুন সমীক্ষায় দেখেছেন যে হাইড্রোক্সিঅ্যাপাটাইট নামক একটি যৌগ ফ্লোরাইডের বিকল্প হতে পারে। ইতিমধ্যেই এটি মাড়ির রোগ ও দাঁতের অতি সংবেদনশীলতার ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পরিচিত, এবং সহজেই আমাদের স্বাভাবিক দৈনন্দিন পরিচ্ছন্নতার রুটিনের একটি অংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। পজনান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের ডেন্টাল সায়েন্টিস্ট এলজবিটা পাসজিনস্কার মতে, দৈনন্দিন ব্যবহার ও দাঁতের গর্ত বা ক্যারিস প্রতিরোধে হাইড্রোক্সিঅ্যাপাটাইট হল ফ্লোরাইডের একটি নিরাপদ এবং কার্যকর বিকল্প।
ডাবল-ব্লাইন্ড র‍্যান্ডামাইজড ট্রায়ালে, ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ১৭১ জন অংশগ্রহণকারীকে এলোমেলোভাবে হাইড্রোক্সিঅ্যাপাটাইট টুথপেস্ট বা ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দেওয়া হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের দাঁতের স্বাস্থ্য প্রথমাবস্থায় একরকম ছিল। সবাই বৈদ্যুতিক টুথব্রাশ এবং একভাবে ব্রাশিং পদ্ধতি অনুসরণ করছিল। তাদের নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এক রাখতেও বলা হয়েছিল। দীর্ঘ ১৮ মাস ব্রাশ করা এবং নিয়মিত চেক-আপের পর, হাইড্রোক্সিঅ্যাপাটাইট ব্যবহারকারী দল বা ফ্লোরাইড ব্যবহারকারী দলের দাঁতে নতুন ক্যাভিটির মধ্যে কোন উল্লেখযোগ্য পার্থক্য ছিল না – প্রায় ৯০ শতাংশেরই নতুন করে কোনো ক্যাভিটি তৈরি হয়নি। হাইড্রোক্সিঅ্যাপাটাইট যেমন একদিকে দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে তেমনি দাঁতের স্বাভাবিক মেরামত প্রক্রিয়াকে বাড়ায়। হাইড্রোক্সিঅ্যাপাটাইট নিয়ন্ত্রকদের দ্বারা নিরাপদ হিসাবে অনুমোদিত হয়েছে এবং টুথপেস্টে যোগ করার জন্য কৃত্রিমভাবে তৈরিও করা যেতে পারে। তবে ফ্লোরাইডের পরিবর্তে ব্যবহারের আগে আরও কয়েক ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। গবেষণাটি ফ্রণ্টিয়ারস ইন পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − 4 =