এ-ও প্রকৃতির এক নিষ্ঠুর প্রতিশোধ। মানুষেরই হাতে তৈরি হয়েছিল লস অ্যাঞ্জেলস শহরের নিখুঁত ল্যান্ডস্কেপ। শহর জুড়ে সবুজ আর সবুজ। পৃথিবীর মানুষের কাছেও বিখ্যাত হয়েছিল লস অ্যাঞ্জেলস তার প্রত্যেকটি রাস্তার হার দিয়ে ছবির মত সাজানো পাম গাছের জন্য। শহরের প্রত্যেকটি বাড়ির লন ছিল সবুজে ঘেরা। স্বয়ংক্রিয় স্প্রিঙ্কলারের সহায়তায় ছেটানো অপর্যাপ্ত জলদানে লনগুলিকে দেখে মনে হত নিপুণ তুলির ছোঁয়ায় আঁকা এক একটি ছবি।
লস অ্যাঞ্জেলস শহর জুড়ে এখনও রয়েছে পামের সারি। বাড়িগুলোর সামনেও রয়েছে লন। কিন্তু তাদের লালন করার মত পর্যাপ্ত জল নেই! লস অ্যাঞ্জেলসের সাজানো বাগান শুকিয়ে যাছে! গতবছর এবং এবছরে ক্যালিফোর্নিয়া-সহ পশ্চিম আমেরিকা তীব্র খরায় আক্রান্ত! একদম প্রথমবারের কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার মত! মানুষেরই হাতে একসময়ে সাজানো প্রকৃতি আজ মানুষেরই নানারকমের অনৈতিক কাজে বিপর্যস্ত হয়ে মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে!
খরার ধাক্কায় লস অ্যাঞ্জেলস-সহ প্রত্যেক শহরের জল ও বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিকরা রাস্তায় নেমেছেন। ‘পেট্রল’ চলছে শহর জুড়ে। আবাসিকদের বলা হচ্ছে, লনগুলোয় এমন ফুলের গাছ লাগান যাতে জল সপ্তাহে একবার দিলেই হয়ে যায়! রাস্তার ধার দিয়ে থাকা সারি সারি পাম গাছগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এতটুকু জল অপ্রয়োজনে খরচ না করার নির্দেশও আবিরাম দিছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকরা। এমনকী নির্দেশ না মানা হলে বাড়িতে এমন এক যন্ত্র বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে সংশ্লিষ্ট আবাসিক দিনে দু’বারের বেশি জল পাবেন না! তার সঙ্গে ২০০ থেকে ৬০০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। কতদিন এভাবে পশ্চিম আমেরিকাকে বাঁচানো যাবে এখন সেই নিয়েই চিন্তা সরকারের।