বন্ধ্যাত্ব নিরাময়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া শিশুদের হার্টের রোগের সম্ভাবনা

বন্ধ্যাত্ব নিরাময়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া শিশুদের হার্টের রোগের সম্ভাবনা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

 

উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর ওপর গবেষণায় দেখা গেছে সহায়ক প্রজনন কৌশলের সাহায্যে সন্তান উৎপাদন হলেও সেই সন্তানদের কিছু শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে। ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালে প্রকাশিত বড়ো সমীক্ষায় জানা গেছে আইভিএফ পদ্ধতিতে উৎপাদিত সন্তানের হৃদপিন্ডে সমস্যা দেখা যাচ্ছে। জন্মগত ত্রুটির মধ্যে কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ এক বড়ো সমস্যা। কিছু ক্ষেত্রে পরবর্তীতে এর থেকে বড়ো সমস্যা তৈরি হতে পারে। সহায়ক প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক সময় একাধিক সন্তান গর্ভে সঞ্চারিত হয়, সেক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা উল্লা-ব্রিট ওয়েনারহোম নেতৃত্বে এই গবেষণা ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেনের ৭৭ লাখেরও বেশি শিশুর ওপর করা হয়েছিল। অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, আগে দেখা গেছে, সহায়ক পদ্ধতিতে জন্মানো শিশুদের জন্মের সময় ওজন কম থাকে বা তাদের নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই জন্ম হয়। গবেষকরা আইভিএফ, ইন্ট্রাসাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইনজেকশন (আইসিএসআই) এবং ভ্রূণ ফ্রিজিং-এর মতো সহকারী প্রজননের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর তথ্যের সাথে প্রাকৃতিকভাবে গর্ভসঞ্চার হয়েছে, এমন শিশুদের তথ্যের তুলনা করেছেন। গবেষকরা মূল্যায়ন করেছেন প্রতিটি গ্রুপে কতজন শিশুর গর্ভাবস্থা থেকে, বা শিশুদের জীবনের প্রথম বছরে হার্টের বড়ো ত্রুটি বা গুরুতর হার্টের ত্রুটি ধরা পড়েছে। তারা জন্মগত হার্টের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এমন অন্যান্য কারণগুলো বিবেচনা করেছিলেন। তারা দেখেন সহায়ক পদ্ধতিতে জন্মানো শিশুদের মধ্যে হৃদপিণ্ড জনিত সমস্যা ৩৬% বেশি দেখা গেছে। প্রতিটা সহায়ক পদ্ধতির ক্ষেত্রে এটা সত্যি। বিশেষত যদি একবার কৃত্রিম গর্ভসঞ্চারে একাধিক সন্তানের জন্ম হয়, তাহলে একটি সন্তানের তুলনায় তাদের ঝুঁকি বেশি থাকে।
জন্মগত হার্টের ত্রুটি অত্যন্ত গুরুতর হলে শিশুদের খুব অল্প বয়সে বিশেষজ্ঞ দিয়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে। তাই কোন শিশু সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তা জানলে হার্টের ত্রুটি নির্ণয় করা ও সঠিক যত্ন, চিকিত্সার মাধ্যমে সাহায্য করা সম্ভব। যেহেতু সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তির সাহায্যে বেশি সংখ্যক মহিলা গর্ভধারণ করছেন, তাই বিশ্বব্যাপী জন্মগত হৃদযন্ত্রের ত্রুটি বৃদ্ধি পেতে পারে। এই বিষয়ে গবেষণা তাই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।