সুমেরু অঞ্চলে এবছরের গ্রীস্মে ছিলেন বরফ বিজ্ঞানী টুইলা মুন। চোখের সামনে যেভাবে বরফ গলতে দেখেছেন সেটা তার কাছে ভয়াবহ মনে হয়েছে। তিনি বলছেন, সুমেরু অঞ্চলে এরপর বরফকে বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়বে! পৃথিবীর অন্যান্য পার্বত্য অঞ্চলে যে গতিতে গ্লেসিয়ার এবং এবং বরফ গলে যাচ্ছে, তার তিন গুণ বেশি গতিতে সুমেরু অঞ্চলের বরফ গলছে! টুইলা মুন জানিয়েছেন ইতিমধ্যে অ্যার্কটিকে একাধিক গ্লেসিয়ার গলে প্রায় অদৃশ্য হওয়ার পথে। পার্মাফ্রস্ট, যাকে বলা হয় বরফের মাটি, সে-ও গলছে মিথেন গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণে। দাবানল শুধু আমাজনে নয়, সুমেরু অঞ্চলেও হয়েছে। সেই কারণেও সেখানকার বরফ অত্যন্ত দ্রুত গতিতে গলে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় এবছরের গ্রীস্মে তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি! এমনকী, সুমেরুতেই একটি অঞ্চল রয়েছে যাকে বলা হয়, বরফের শেষ অঞ্চল। সেই অঞ্চলেও অপ্রত্যাশিতভাবে দ্রুত গলছে বরফ। টুইলা মুন জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে সুমেরুতেও গ্রীস্মে আর কোনও বরফ দেখা না যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্নো এবং আইস ডাটা সেন্টারে কর্মরত টুইলা মুনের আক্ষেপ, “যা আমরা ইতিমধ্যে হারিয়েছি তার জন্য আক্ষেপের শেষ নেই। কিন্তু এখনও পৃথিবীর বাতাসে যে পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড মিশছে তাতে আগামীদিনে হিসেব করতে গিয়ে দেখব, যে পরিমাণ বরফ প্রতিনিয়ত গলে যাচ্ছে এবং যে পরিমাণ বরফ থাকছে তার মধ্যে বিশাল এক তফাৎ সৃষ্টি হচ্ছে। এই বিশাল তফাৎ আমাদের আক্ষেপও করতে দেবে না, তৈরি করবে আতকের।”
আর্কটিক মনিটরিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রাম জানিয়েছে ১৯৭১ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে আর্কটিকের সারফেস পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় তিন গুণ বেশি গরম হয়েছে।