শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত অপচয়িত জল প্রযুক্তির সাহায্যে পরিশুদ্ধ করে গৃহস্থালি ও শিল্পকাজেই পুণর্ব্যবহারের প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন একদল ভারতীয় বিজ্ঞানী। মূলত আইআইটি কানপুর, জয়পুরের মালব্য ন্যাশানাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি ও এমবিএম কলেজের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে পূর্বতন প্রথাগত প্রযুক্তি AOP (অ্যাডভান্স অক্সিডেশান প্রসেস)-কে আরো উন্নততর করে গড়েছে। পূর্বতন যে ত্রিস্তরীয় এওপি প্রযুক্তি, তা শিল্পকারখানা নির্গত অপচয়িত বর্জ্য-জল পরিশুদ্ধ করতে পারে না। তাছাড়াও চলতি প্রযুক্তিতে যা খরচ তার ৫০% খরচে নতুন প্রযুক্তিটি কাজ করবে৷ নতুন প্রযুক্তিতে প্রাথমিক পরিশুদ্ধি ধাপের পর বালি দ্বারা পরিশুদ্ধির প্রক্রিয়া, এরপর ক্রমে আরো একটি অক্সিডেশন প্রসেস বা জারণ প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় কার্বন পরিশুদ্ধি প্রক্রিয়ায় বর্জ্য-জল ব্যবহারোপোযোগী করা হবে।
শিল্প কারখানা নির্গত বর্জ্যজলে মিশে থাকে কৃত্রিম রঞ্জক, বিষাক্ত রঙ, দুর্গন্ধ এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্যান্সারজীবাণু। যা পরিবেশ, বিশেষত জলজ পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিসাধন করে। ফলে নির্গত বর্জ্য জল পরিশুদ্ধির এই প্রযুক্তি যে কতখানি পরিবেশবান্ধব হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তার সঙ্গে ভারতবর্ষ তথা পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গাই আছে যেখানের মানুষ বিশুদ্ধ জলের অভাবে ভোগেন। সেক্ষেত্রেও এ প্রযুক্তি কার্যকরী হবে।
ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় ওয়াটার টেকনোলজি ইনিসিয়েটিভ, ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এর সঙ্গে যৌথ সম্পাদনায় জয়পুরে ‘টেক্সাটাইল ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পার্কে’র ‘লক্ষ্মী টেক্সটাইলে’র কারখানা নির্গত জলে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন প্রযুক্তি কারখানা নির্গত জল ১০০% পরিশুদ্ধ করে পুনর্নব্যবহার করার লক্ষ্য নিয়েছে। প্রাথমিক লক্ষ্য গৃহস্থালি ও শিল্পের কাজে প্রতিদিন ১০ কিলোলিটার পুর্নব্যবহারযোগ্য জল উৎপাদন করা। পরবর্তীকালে এই মাত্রা প্রতিদিন ১০০ কিলোলিটার করার লক্ষ্য রয়েছে।