সারাদিন বসে থাকা এড়াতে বেশ দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা ভালো বলে মনে করবেন না। এটা বসে থাকার খারাপ প্রভাব মোটেও কমায় না, বরং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বেশ সমস্যাজনক। নেদারল্যান্ডের গবেষকদের বক্তব্য এটাতেও জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। ৮৩,০১৩ জন প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর ইউকে বায়োব্যাঙ্কের মোটামুটি সাত বছরের তথ্য নিয়ে তাদের কার্যকলাপ, ঘুম এবং বসে থাকার সময় জানতে কব্জিতে বাঁধা ডিভাইস ব্যবহার করে হয়েছে। দাঁড়িয়ে থাকায় ও বসে থাকায় ব্যক্তিরা যে পরিমাণ সময় কাটিয়েছিলেন তা তাদের কার্ডিওভাসকুলার রোগের সাথে মিলেছে। করোনারি হার্টের অসুখ, হার্ট ফেল, স্ট্রোক – সেইসাথে রক্ত সংবহনের রোগ, দাঁড়িয়ে থাকাতে নিম্ন রক্তচাপ, ভেরিকোজ শিরা, দীর্ঘস্থায়ী শিরার অপ্রতুলতা ও শিরার আলসার দেখা গেছে, কারণ রক্ত শরীরের নিম্নভাগে জমা হতে থাকে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ সায়েন্টিস্ট ম্যাথু আহমাদি জানিয়েছেন, কিছু গবেষণায় দাঁড়ানোকে ভালো বলার কারণ এতে ব্লাড প্রেসার কমে, ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম হয়। কিন্তু তাদের গবেষণায় মূলত ব্যক্তির হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, মৃত্যু এগুলো দেখা হয়েছিল। বসে থাকলে ব্যক্তির হার্টের অসুখ বাড়ে বা কমে না, যা প্রধান সমস্যা দেখা যায়, তা হল রক্ত সংবহন তন্ত্রের সমস্যা। দিনে দুঘণ্টার বেশি দাঁড়াতে হলে প্রতি আধ ঘণ্টায় এই বিপদ ১১% বাড়ে। দিনে দশ ঘণ্টার বেশি বসে থাকলে প্রতি ১ ঘণ্টার জন্য সংবহন তন্ত্রের সমস্যা ২৬% বাড়ে। অর্থাৎ শুধু দাঁড়ালে বা বসে থাকলে ওর্থোস্ট্যাটিক সারকুলেটারি ডিজিজ বাড়ে। শরীরের নড়াচড়া হওয়া বেশি প্রয়োজন। বসে থাকার বিপদ এড়াতে দাঁড়িয়ে থাকলে চলবে না, শরীর যাতে বিভিন্নভাবে নড়া চড়া করে তার ব্যবস্থা করতে হবে, হাঁটতে হবে। এই গবেষণা ইন্টারন্যাশানাল জার্নাল অফ এপিডেমিওলজি-তে প্রকাশিত হয়েছে।