বাচ্চারা মানুষের চেয়ে রোবটকে বেশি ভরসা করে- জানাচ্ছে গবেষণা

বাচ্চারা মানুষের চেয়ে রোবটকে বেশি ভরসা করে- জানাচ্ছে গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ জুন, ২০২৪

দ্য আয়রন জায়েন্ট থেকে শুরু করে বিগ হিরো ৬- আমরা সকলেই কমবেশি এই সিনেমার সাথে পরিচিত। এই সব সিনেমায় আমরা বাচ্চাদের সাথে রোবটের বন্ধুত্ব দেখেছি। সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা দল জানিয়েছে শুধু কল্পকাহিনীতে নয় এখন বাস্তবেও রক্ত মাংসের মানুষের চেয়ে বাচ্চারা বেশি ভরসা করে রোবটকে। ৩ থেকে ৬ বছর বয়সী ১১১ টি বাচ্চাদের নিয়ে করা এই গবেষণায় দেখা গেছে বাচ্চারা রোবটকে বেশি বিশ্বাস করে এবং রোবট ভুল করলে তা মেনে নেওয়ারও প্রবণতা তাদের মধ্যে দেখা গেছে। শৈশবে শিশুরা প্রতিনিয়ত শেখে। আশপাশের জগতকে জানে, চেনে, বোঝার চেষ্টা করে, নতুন নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে, কল্পকাহিনী থেকে বাস্তবকে আলাদা করতে শেখে। এই নতুন গবেষণায় গবেষকরা দেখতে চেয়েছিলেন কীভাবে তারা বিভিন্ন উত্স থেকে তথ্য গ্রহণ করে। তাই তাদের প্রশ্ন হল বিভিন্ন উৎসের সম্মুখীন হলে শিশুরা কার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে?
এই গবেষণায় যেখানে মানুষ এবং রোবট উভয়কেই সমানভাবে নির্ভরযোগ্য হিসাবে দেখানো হয়েছে, দেখা গেছে নতুন বস্তুর নাম জানতে বা বস্তুর গায়ে আটকানো কোন লেবেলটি সঠিক তা চিনে নিতে একটু বড়ো বাচ্চারা রোবটকেই বেশি ভরসা করেছে। নিজের গোপন কথা কার সাথে ভাগ করে নিতে চায় বা কার সাথে তারা বন্ধুত্ব করতে চায় অথবা শিক্ষক হিসাবে তারা কাকে পেতে চায় সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা রোবটকেই বেশি ভরসা করে বলে জানিয়েছে। তবে বয়স অনুসারে বাচ্চাদের মধ্যে এই ভরসার তারতম্য দেখা গেছে। ছোটোদের তুলনায় বয়সে বড়ো বাচ্চাদের মানুষের প্রতি বেশি ভরসা বা বিশ্বাস দেখিয়েছে যখন তাকে দেখানো হয়েছে যে রোবটটি মানুষের তুলনায় কম বিশ্বাসযোগ্য। সামগ্রিকভাবে দেখলে, গবেষণার ফলাফল থেকে বোঝা যায় যে শিশুরা বিশ্বাস করে যে নির্ভরযোগ্য মানুষের চেয়ে নির্ভরযোগ্য রোবটের উপর বেশি বিশ্বাস করা যায়। গবেষকরা আশাবাদী যে এই গবেষণাটি শিক্ষার ক্ষেত্রে উপযোগী প্রতিপন্ন হতে পারে, বিশেষ করে এমন একটি বিশ্বে যেখানে শিশুরা ক্রমাগত প্রযুক্তি দ্বারা বেষ্টিত। গবেষকরা অবশ্য এই ফলাফলের কারণ সম্বন্ধে অবগত নন। ভবিষ্যতে গবেষকরা বাচ্চাদের সাথে ভিডিওর মাধ্যমে সাক্ষাৎকারের পরিবর্তে মুখোমুখি সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা নেবেন। কম্পিউটারস ইন হিউম্যান বিহেভিয়ারে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।

 

ছবি: DIW-Aigen

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + 2 =