বাড়ির কাঠামো নির্মাণে শক্তিশালী পুর্নব্যবহারযোগ্য কাচের ইট

বাড়ির কাঠামো নির্মাণে শক্তিশালী পুর্নব্যবহারযোগ্য কাচের ইট

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২২ অক্টোবর, ২০২৪

বাচ্চাদের বেশ জনপ্রিয় এক খেলনা, লেগো ব্লক, যা নানাভাবে জুড়ে বিভিন্ন কাঠামো নির্মাণ করা যায়। আবার খুলে নিয়ে নতুন কাঠামো বানানো যায়। যদি এরকম নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে বাড়ি ঘর বানানো যায়, যা পুনর্বিন্যাসযোগ্য? একটা বিল্ডিংয়ের জীবনকালের শেষে এই নির্মাণ সামগ্রী খুলে নিয়ে আবার নতুন কাঠামোতে পুনরায় একত্রিত করা গেলে, একটা টেকসই চক্র পাওয়া যাবে, যাতে একই ভৌত সামগ্রী ব্যবহার করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নতুন বিল্ডিং বানানো যেতে পারে। এই লক্ষ্যে MIT ইঞ্জিনিয়াররা 3D-প্রিন্টেড, পুনর্ব্যবহৃত কাচ থেকে পুনর্বিন্যাসযোগ্য কাচের ইট তৈরি করেছেন। এই লক্ষ্য সফল হলে একটা বিল্ডিংয়ের উপকরণগুলো পুনরায় ব্যবহার করাযাবে, এতে নতুন উপকরণের উত্পাদন হ্রাস পাবে, এবং নির্মাণ শিল্পের “মূর্ত কার্বন” হ্রাস পাবে, অর্থাৎ একটা বিল্ডিং নির্মাণ থেকে ধ্বংস পর্যন্ত প্রতি প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস পাবে।
MIT দল শক্তিশালী, বহুস্তরযুক্ত ইন্টারলক ডিজাইনের কাচের ইট তৈরি করেছেন, যার আকার ৪-এর মতো। যান্ত্রিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, একটা কাচের ইট কংক্রিট ব্লকের মতো চাপ সহ্য করতে পারে। গবেষকরা আন্তঃলক কাচের ইট দিয়ে একটা প্রাচীর তৈরি করে প্রদর্শন ছিলেন। তাদের ধারণা 3D-প্রিন্টযোগ্য কাচের গাঁথনিকে বহুবার পুনর্ব্যবহারযোগ্য ইট হিসাবে বাড়ির সম্মুখভাগে এবং অভ্যন্তরীণ দেয়াল নির্মাণের জন্য পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এই গবেষণা গ্লাস স্ট্রাকচারস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা গ্লাস 3D প্রিন্টার 3 ব্যবহার করেছেন। এটা একটা চুল্লির সাথে যুক্ত যা চূর্ণ কাচের বোতলকে গলিত, মুদ্রণযোগ্য আকারে নিয়ে যায়, তারপর প্রিন্টার সেখান থেকে স্তরে স্তরে কাচ জমা করে। গবেষকরা সোডা-লাইম গ্লাস ব্যবহার করে প্রোটোটাইপ কাচের ইট মুদ্রিত করেছেন। তারা প্রতিটা মুদ্রিত ইটের ওপর দুটো গোলাকার পেগ যুক্ত করেছেন। খেলনা ব্লকের মতো, পেগগুলো ইটগুলোকে আটকে, বড়ো কাঠামো তৈরি করতে সাহায্য করে। ইটগুলোর মধ্যে আরেকটা উপাদান কাচের পৃষ্ঠের মধ্যে আঁচড়, ফাটল প্রতিরোধ করে। তবে ইটের কাঠামো ভেঙে পুনর্ব্যবহার করার সময় এটা অপসারণ করা যেতে পারে। এতে ইটগুলো গলতে সাহায্য হয় আর নতুন আকার দেওয়া যায়।

 

Photo Credit: Massachusetts Institute of Technology