যানবাহন, কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশে বাড়িয়ে দেয় দূষণের মাত্রা। সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণা বলছে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কম থাকলে সংক্রামক বায়ুবাহিত ভাইরাল লোড হ্রাস পায়। যদিও গবেষণাটি মূলত কোভিড ১৯-এর প্যাথোজেনের উপর কেন্দ্র করে হয়েছে, কিন্তু যেখানে বায়ুচলাচল সীমিত সেই স্থানগুলোতে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য এর স্পষ্ট প্রভাব থাকতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিস্টল রসায়নবিদ অ্যালেন হ্যাড্রেলের মতে যে ঘরে অনেক মানুষের ভিড় বা যে ঘর বদ্ধ সেখানে একটি খোলা জানালা থাকলে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব কম থাকবে, যার ফলে ভাইরাস অনেক দ্রুত নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। হ্যাড্রেল এবং সহকর্মীরা আবিষ্কার করেন যে কোভিড ভাইরাসের স্থিতিশীলতা বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের স্তরের দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়। তারা কন্ট্রোলড ইলেক্ট্রোডাইনামিক লেভিটেশন অ্যান্ড এক্সট্রাকশন অফ বায়োয়ারোসল অনটু আ সাবস্ট্রেট (সিইএলইবিএস) নামে একটি নতুন কৌশল ব্যবহার করে ভাসমান ভাইরাস কণার উপর তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং বিভিন্ন গ্যাসের ঘনত্বের প্রভাব পরিমাপ করে। বর্তমানে বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব প্রতি মিলিয়নে (পিপিএম) প্রায় ৪০০ ভাগ। একটি বন্ধ ঘরে অনেক মানুষের ভিড়ে এর ঘনত্ব হতে পারে প্রায় ৩০০০ পিপিএম। গবেষকের দল দেখেন যে বাইরের বাতাসের তুলনায় সংক্রামক ভাইরাল কণার সংখ্যা এই বদ্ধ পরিবেশে ১০ গুণ বেশি হতে পারে। শীতের সময় মানুষ ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখে ফলত সেই সব পরিবেশে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেশি থাকে। সুতরাং সংক্রমণের মাত্রাও বেশি হয়। গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে জলবায়ু পরিবর্তনের সূত্রপাতের সাথে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর মাত্রা সামান্য উত্থিত হলেই বাতাসে ভাইরাসের বেঁচে থাকার হার এবং ঝুঁকিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে। ভবিষ্যতে কোনও মহামারীর ক্ষেত্রে এই গবেষণার ফলাফল প্রয়োজনীয় হতে পারে বলে গবেষকদের মত।