বাস্টার্ড ছানা বাঁচানোর লড়াই

বাস্টার্ড ছানা বাঁচানোর লড়াই

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২২ মে, ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। এরই মধ্যে ভারতের বিরলতম পাখিদের একটি, ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড’কে রক্ষার জন্য জরুরি সংরক্ষণ প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। ১০ মে ভোরবেলা গোলাবর্ষণ এবং ড্রোনের তৎপরতার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় কেঁপে ওঠে মরুর বুক। তার স্পন্দনে, ডিম ফুটে বেরোনো সদ্যজাত ছানাগুলির শরীরে কাঁপন ধরে। বন্যপ্রাণী আধিকারিকদের চোখের সামনে ফুটে ওঠে মৃত্যু। ১৮টি ছানার মধ্যে নয়টি ছানাকে তুলে নেওয়া হয় হাতে হাতে। এরই নাম ‘অপারেশন রেসকিউ বাস্টার্ড’। রাজস্থান মরুভূমির গর্বের প্রতীক এই বাস্টার্ড পাখি। স্থানীয়ভাবে ‘গোদওয়ান’ নামে পরিচিত এই পাখির মাত্র ১৩০-টিরও কম আজ বেঁচে আছে। ঐ নয়টি ছানাকে আজমির জেলার আরওয়ার গ্রামে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে একটি নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেন বনাধিকারিকরা। এই পাখিগুলি চড়া শব্দ এবং কম্পনের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। ‘রামদেওরা সংরক্ষণ কেন্দ্র’ গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড পাখির পুনরুদ্ধার কর্মসূচিতে ভারতের একমাত্র সক্রিয় এবং নিরাপদ স্থান। এটা কোনও সোজাসাপটা স্থানান্তর ছিল না। যাত্রাপথ অতিক্রম করতে সময় লাগে ১০ ঘণ্টারও বেশি। চাপ কমানোর জন্য নরম তুলোয় মোড়া গদি এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশেষ যানবাহনে এগুলিকে স্থানান্তরিত করা হয়। এমনকি গাড়ির সাসপেনশনটিও ছিল অতি-নরম। যেন একটা হোঁচটও না লাগে ওই জাতির ভবিষ্যতের গায়ে। ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিজ্ঞানী সুতীর্থ দত্ত বলেন, “এই ছানাগুলোর জন্মইহয়েছে কৃত্রিমভাবে তা দিয়ে । সঠিক তাপমাত্রা, জলীয় বাষ্প, থেকে এতটুকু এদিক-ওদিক মানেই মৃত্যু!” রাজস্থানের প্রধান বনাধিকারিক অরিজিৎ ব্যানার্জি বলেন, “সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে। সবকটি ছানাই ভালো আছে এবং তাদের নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে”। বাস্টার্ডগুলি তো শুধু পাখি নয়, তারা এক চলমান বিবর্তনের নথি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − three =