পরিষ্কার একটা দিনে, ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে এক ফিল্ড স্টেশনে ইকোলজিস্ট এলার্ড হান্টিং অদ্ভুত বিষয় লক্ষ্য করলেন। পরিবেশের স্বাভাবিক তড়িৎ আধানের মান একধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গেছে নাকি। এই অপ্রত্যাশিত বিষয়টা ধাওয়া করে প্রোফেসর হান্টিং বুঝতে পারলেন, নেপথ্যে আছে মৌমাছির বড়ো একটা ঝাঁক!
এপিস ম্যালিফেরা, মৌমাছিদের ল্যাটিন নাম। হান্টিং ও তাঁর গবেষক দল একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করলেন গত ২৪শে অক্টোবর আইসায়েন্স পত্রিকায়। হান্টিং বলছেন, মৌমাছির ঝাঁক থেকে তৈরি হওয়া বিদ্যুৎ আধানের প্রভাব এতটা বেশি হতে পারে সেটা কল্পনা করা যায়নি। যদিও বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জানেন, মৌমাছি সহ আরও অন্যান্য পতঙ্গের দলবদ্ধ কম্পনে সামান্য তড়িৎ আধানের সৃষ্টি হয়েই থাকে।
আরও খানিকটা গবেষণার পর হান্টিং ও তাঁর দল দেখলেন, প্রতি মিটারে প্রায় ১০০০ ভোল্ট তড়িৎ আধান সৃষ্টি হয়েছে মৌমাছির ঝাঁক থেকে। বজ্রগর্ভ মেঘের তুলনায় তা অনেকখানি বেশি। গবেষকরা অনুমান করছেন, পতঙ্গের তৈরি করা এই ধরণের বিপুল তড়িৎ আধানে ধুলোর গতিবিধির মতো প্রাকৃতিক ঘটনাও প্রভাবিত হয়।
হান্টিং ও তাঁর সহকর্মীরা একটা কম্পিউটার মডেল বানিয়ে ফেলেছেন এর মধ্যেই। তাতে নানা পতঙ্গ দ্বারা সৃষ্ট বিদ্যুৎ আধানের একটা আন্দাজ পাওয়া যাবে। যেমন, পঙ্গপালের মতো পোকাদের ঝাঁকের বেগ আর তীব্রতা মৌমাছির চেয়ে বেশি। সুতরাং পরিমাণে আরও বেশি আধান তারা পরিবেশে তৈরি করতে সক্ষম, এমনটাই মতামত অন্যতম মুখ্য গবেষক ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াম ও’রেইলির।