বিপন্ন প্রজাতির উপর নজরদারী করছে নাসা

বিপন্ন প্রজাতির উপর নজরদারী করছে নাসা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৪ অক্টোবর, ২০২৪

মহাকাশ থেকে চোখ সরিয়ে এবারে পৃথিবীর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে নাসা। নাসা তার শক্তিশালী উপগ্রহর সাহায্যে বাঘ এবং হাতির মতো বিপন্ন প্রজাতিকে রক্ষা করতে বাস্তুবিজ্ঞানীদের সাহায্য করছে৷ প্রাণীকুলের বাসস্থানের অভাব বর্তমানে আমাদের গ্রহের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা। যেহেতু মানুষের জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, আমরা বনভূমি নষ্ট করে শহর তৈরি করছি এবং সম্পদের একটি বৃহত্তর অংশ ব্যবহার করছি। ফলত বাঘ এবং হাতির মতো বড়ো প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
একদা এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে রাজত্ব করেছে বাঘ- প্যানথেরা টাইগ্রিস। বিগত দেড়শো বছরে তাদের আবাসস্থলের প্রায় ৯৩% হ্রাস পেয়েছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান বর্তমানে এই রাজকীয় শিকারীদের সংখ্যা প্রায় ৪০০০-এরও কম। কিন্তু নাসার উপগ্রহ তথ্য অনুসারে আমাদের আমাদের নিরাশ হওয়ার কারণ নেই। এমন অনেক স্থান চিহ্নিত করা গেছে যা এই শিকারী বাঘেদের জন্য উপযুক্ত বাসস্থান বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। নাসা দ্বারা সংগৃহীত এই তথ্যে ইনফ্রারেড এবং স্পেকট্রোরেডিওমিটার ইমেজিং রয়েছে – যা উপর থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের গাছপালার অবস্থা নিরীক্ষণ করতে পারে। ভৌগলিক ম্যাপিং এবং পূর্বের কাজের সূত্র ধরে বিজ্ঞানীরা বাঘেদের সম্ভাব্য আবাসস্থল শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে যেখানে বাঘ স্থানান্তরিত হতে পারে বা পুনঃপ্রবর্তিত হতে পারে। যদি এই আবাসস্থলে পর্যাপ্ত শিকার পাওয়া যায় তবে বাঘেরা তাদের খাবার পাবে এবং তাদের বিচরণ ক্ষেত্র প্রায় ৫০% বৃদ্ধি পাবে। নাসার বেশ কিছু গবেষক দক্ষিণ ভুটানে এশিয়ার হাতি- এলিফাস ম্যাক্সিমাস-এর পরিবর্তনশীল আবাসস্থলের মানচিত্র তৈরি করতে অনুরূপ কৌশল ব্যবহার করেছেন। হাতিদের আবাস্থলও ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে এবং প্রায়শই তাদের মানুষের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গবেষকের দল এমন বাসস্থান চিহ্নিত করেছেন যার ফলে মানুষ ও হাতির দ্বন্দ্ব নিরসনের সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বে, সংরক্ষণ বিজ্ঞানীদের এই প্রাণীদের বাসস্থান এবং অবস্থান পরিবর্তনের তথ্য পেতে বেশ বেগ পেতে হত এবং এগুলো ব্যয়বহুল, সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং ছিল। নাসার স্যাটেলাইট এই তথ্যগুলোকে রিয়েল টাইম স্কেলে সংগ্রহ করে, এবং বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানীদের সুযোগ করে দেয় যাতে তারা অনেক দ্রুত এবং আরও দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে। এই উপগ্রহ দিন ও সপ্তাহ অনুসারে পৃথিবীর পৃষ্ঠের বিস্তীর্ণ এলাকা পর্যবেক্ষণ করে, যা বাঘের মতো প্রাণীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ তারা বিস্তির্ণ অঞ্চলে ঘুরে বেড়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 1 =