বিপন্ন প্রাণীদের বাঁচাতে নতুন প্রযুক্তি

বিপন্ন প্রাণীদের বাঁচাতে নতুন প্রযুক্তি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২২ অক্টোবর, ২০২৪

কখনও প্রকৃতির নিয়মে, কখনও জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে আবার কখনও মানুষের কারণে পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে গিয়েছে বহু প্রাণী। এক সময় তারা সদর্পে দাপিয়ে বেড়াত। আজ তারা বিলুপ্ত প্রাণীদের তালিকায়। আবার এমন অনেক প্রাণী আছে যারা বিপদে রয়েছে, তাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এদের বলা হয় বিপন্ন প্রাণী। এদের তালিকাও বেশ বড়ো। এসবের ক্ষেত্রে মানুষই ভিলেন। আবার সেই মানুষই পারে সে সব প্রাণীদের বিপন্ন তালিকাভুক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে। তাই বিজ্ঞানীরা কাজে লেগে পড়েছেন। তারা এক নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিপন্ন প্রাণীদের ডাক শুনে তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছেন। অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত এই গবেষণায় বিপন্ন প্রজাতির হাতি, তিমি এবং পাখিদের ডাক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রাণীদের ডাক বিশ্লেষণ তাদের সংখ্যা অনুমান করতে, কোন নির্দিষ্ট এলাকায় কোন প্রাণী বাস করে তা শনাক্ত করতে, তাদের অভিবাসনের ধরন বোঝার জন্য এবং মানুষের সৃষ্ট শব্দের ক্রমবর্ধমান মাত্রার কারণে তাদের উপর কোন নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করা যায় কিনা তা বোঝার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। গবেষণায় জানা গেছে প্রাণীদের ডাক বিশ্লেষণের জন্য প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে নতুন পদ্ধতিটি আরও উন্নত। সুপারলেট ট্রান্সফর্ম নামে পরিচিত এই নতুন পদ্ধতিটি পরীক্ষা করার সময়, গবেষকরা প্রাণীদের ডাকের অজানা কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে এশিয়ার হাতির ডাক, আমেরিকার কুমির, এমুর মতো একধরনের বড়ো পাখি-নাম সাউদার্ন ক্যাসোওয়ারি আর নীল তিমির গান। গবেষকদের মতে কখনও কখনও, আমরা যে যন্ত্রপাতিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি সেগুলো আসলে কাজের জন্য সেরা সরঞ্জাম নাও হতে পারে। এটি বিশেষত বায়োঅ্যাকোস্টিক্সের মতো ক্রস-ডিসিপ্লিনারি ক্ষেত্রগুলোতে সত্য, যেখানে পদ্ধতিগুলো প্রযুক্তি নির্ভর এবং একাধিক ক্ষেত্রে দক্ষতার প্রয়োজন।এই গবেষণায় যে নতুন পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়েছে তা অনেক বেশি নির্ভুল এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে কম দক্ষতার প্রয়োজন। বর্তমানে ব্যবহৃত পদ্ধতিতে একই সময়ে শব্দের ছন্দ এবং পিচ উভয়ই সঠিকভাবে প্রকাশ করতে অসুবিধা হয়। এই সীমাবদ্ধতা নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে আরও স্পষ্ট। তাই নীল তিমির ডাক বিশ্লেষণে বাধার সৃষ্টি করে। অডিও সিগন্যাল বিশ্লেষণের জ্ঞান ছাড়াই নতুন প্রযুক্তিটি মানুষ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবে, একটি সহজ ব্যবহারযোগ্য অ্যাপের মাধ্যমে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের গবেষকরাও এটি সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।