বিবর্তিত হয়ে মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠছে ব্যাকটেরিয়া

বিবর্তিত হয়ে মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠছে ব্যাকটেরিয়া

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১১ জুলাই, ২০২৪
ভাইরাস

সিউডোমোনাস অ্যারুগিনোসা – প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাসকারী একটি ব্যাকটেরিয়া আজ মানুষের শরীরকে বিভিন্ন ওষুধের প্রতি প্রতিরোধী করে তুলছে বিশেষ করে যাদের ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে। এরা খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়েছে এবং বিগত ২০০ বছরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে এর সম্ভবত কারণ হল মানুষের আচরণের পরিবর্তন। বর্তমানে পি অ্যারুগিনোসা সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৫ লাখেরও বেশি মৃত্যুর জন্য দায়ী, যার মধ্যে ৩ লাখের বেশি মৃত্যু অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বা এএমআর-এর কারণে ঘটে। সিওপিডি বা ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্ষতি, সিস্টিক ফাইব্রোসিস (সিএফ), এবং নন-সিএফ ব্রঙ্কাইকটেসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে সংবেদনশীল। পি অ্যারুগিনোসা কীভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাসকারী একটি জীব থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণকারী এক প্যাথোজেনে বিবর্তিত হয়েছিল তা জানা যায়নি। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক দল বিশ্বজুড়ে সংক্রামিত ব্যক্তি, প্রাণী এবং পরিবেশ থেকে নেওয়া প্রায় ১০,০০০ নমুনা থেকে ডিএনএ-র তথ্য পরীক্ষা করেন যার ফলাফল পরে সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়। তথ্য বিশ্লেষণ করে, গবেষকরা দেখেছেন যে সংগৃহীত নমুনা ব্যাকটেরিয়াগুলো একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। লক্ষণীয়ভাবে দেখা গেছে দশটির মধ্যে প্রায় সাতটি সংক্রমণের জন্য দায়ী মাত্র ২১টি জেনেটিক ক্লোন যা প্রতিবেশী ব্যাকটেরিয়া থেকে নতুন জিন অর্জন করে দ্রুত বিবর্তিত হয়েছে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে বিগত ২০০ বছরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিস্তারটি সম্ভবত মানুষের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাস শুরু করার ফলে ঘটেছে, যেখানে বায়ু দূষণের কারণে ফুসফুস সংক্রমণের প্রবণতা বেশি এবং যেখানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ ছিল। এই এপিডেমিক ক্লোনগুলোর নির্দিষ্ট ধরনের রোগীদের সংক্রামিত করার প্রবণতা থাকে- সিস্টিক ফাইব্রোসিস বা সিএফ-এ আক্রান্ত ব্যক্তি এবং নন-সিএফ ব্রঙ্কাইকটেসিসের আক্রান্ত ব্যক্তি। ফুসফুসে সংক্রামিত হওয়ার পরে, এই ব্যাকটেরিয়া একটি নির্দিষ্ট ফুসফুসের পরিবেশের জন্য আরও বিশেষায়িত হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায়ে বিবর্তিত হয়। গবেষকদের মতে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো যে গতিতে বিবর্তিত হচ্ছে তা মহামারীর কারণ হয়ে উঠতে পারে সুতরাং যে সব রোগীদের ঝুঁকি বেশি তাদের সকলের পদ্ধতিগত, প্রো-অ্যাকটিভ স্ক্রীনিং প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + eight =