বিলুপ্তির মুখ থেকে ফিরছে সারস, আশা বিজ্ঞানীদের

বিলুপ্তির মুখ থেকে ফিরছে সারস, আশা বিজ্ঞানীদের

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌।
Posted on ২৮ আগষ্ট, ২০২২

গোটা শরীর ঢাকা কালো পালকে। সরু গলায় সাদা পশম। প্রায় এক হাত লম্বা ঠোঁট। বিরল এই সারসের প্রজাতি পরিচিত ‘উলি নেকড স্টর্ক’ নামে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার-এর রেড লিস্টে এবার খানিক পদোন্নতি হল এই বিশেষ প্রজাতিটির। আশাজনকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ‘নিয়ার থ্রেটেন্ড’ বিভাগ থেকে এই বিশেষ সারসকে এবার উত্তীর্ণ করা হল ‘ভালনারেবল’ বিভাগে। আর তার নেপথ্যে রয়েছে উত্তর ভারতের রাজ্য হরিয়ানা।
জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ক্রমশ বিপন্ন হয়ে উঠছে পাখিরা। সেখানে এই অবলুপ্তির সীমানা থেকে যেন ফিরে এসে নজির গড়ল এই প্রজাতি। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মনে করা হত, এই বিশেষ সারসদের জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণ অরণ্য-নিধন। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে ভিন্ন করা। এই বিশেষ প্রজাতির সারসরা মূলত বসতি তৈরি করে জলাভূমির আশে-পাশে। জলাভূমির সংখ্যা কমে যাওয়াতেই অবলুপ্ত হয়ে বসেছিল তারা। আর ঠিক এই জায়গাতেই হরিয়ানা একপ্রকার স্বর্গ রাজ্য হয়ে ওঠে এই প্রজাতিটির জন্য।
না, বিস্তীর্ণ জলাভূমি নেই হরিয়ানায়। তবে কৃষিকার্যের সেচের জন্য গোটা হরিয়ানা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অজস্র খাল। পাশাপাশি চাষের জমিতেও অভাব পড়ে না পোকা-মাকড়ের। তাই কৃষিক্ষেত্র সংলগ্ন জায়গাগুলিই বসবাসের জন্য বেছে নিয়েছে এই সারসরা। বিগত এক দশকে তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতোই। আমেরিকাকে টপকে এখন ভারতই এই বিশেষ সারস প্রজাতির বৃহত্তম আবাসস্থল। শুধু উপযুক্ত পরিবেশ এবং বাস্তুতন্ত্রের জন্যই নয়, ‘উলি নেকড স্টর্ক’-এর জনসংখ্যার নেপথ্যে স্থানীয়দের অবদানও কম নয়। কৃষকরাও টের পেয়েছেন, আদতে এই সারসের উপস্থিতি পোকা-মাকড়ের থেকে নিরাপত্তা প্রদান করে জমিকে। ফলে, দায়িত্ব নিয়েই তাঁরা বন্ধ করেছেন এই সারসের শিকার। জমিতে বিষাক্ত কীটনাশকের পরিমাণও কমিয়েছেন ধাপে ধাপে। তাতে সামগ্রিকভাবে সুস্থতায় ফিরছে পরিবেশও।