বিশাল দন্তবিশিষ্ট ওটোডাস মেগালোডন কী উষ্ণ-শোণিত ছিল?

বিশাল দন্তবিশিষ্ট ওটোডাস মেগালোডন কী উষ্ণ-শোণিত ছিল?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩ জুলাই, ২০২৩

২৬-এ জুন প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ গবেষকরা রিপোর্ট করেছেন যে ওটোডাস মেগালোডন -এর দাঁতের জীবাশ্মের রাসায়নিক পরিমাপ থেকে ধারণা করা যায় যে এইসমস্ত হাঙরদের শরীরের তাপমাত্রা তাদের আশেপাশের জলের তুলনায় বেশি৷ জীবিত এবং বিলুপ্ত উভয় হাঙরের দাঁতে কার্বন এবং অক্সিজেনের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় যে হাঙরের শরীরের তাপমাত্রা সে সময়ের আনুমানিক সমুদ্রের জলের তাপমাত্রার চেয়ে প্রায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

. উষ্ণ-শোণিত-এই বৈশিষ্ট্য হাঙরদের জন্য অনেকটা শাঁখের করাতের মতো। ও. মেগালোডন উষ্ণ-শোণিত হওয়ার ফলে সম্ভবত হয়ে উঠেছিল দ্রুত গতিসম্পন্ন এক ভয়ঙ্কর শিকারী যারা প্রায় ২০ মিটার লম্বা এবং পৃথিবীতে বসবাসকারী বৃহত্তম মাংসাশী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু হাঙরের সর্বগ্রাসী ক্ষুধা হয়তো এই প্রজাতির ধ্বংসের কারণও হয়ে উঠেছে। ইউসিএলএ-এর সামুদ্রিক জৈব-রাসায়নবিদ রবার্ট ঈগল বলেছেন, এই অস্বাভাবিক বিশালত্বের কারণে তাদের বিপাকীয় হার বেশি ছিল। তাই যখন জলবায়ু পরিবর্তিত হয়েছে এবং খাদ্য দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছিল তাদের আরও বেশি খাবারের প্রয়োজন হত ফলত তারা বিলুপ্তির পথে এগিয়ে গেছে।

স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে তাপ তৈরি হয়। তাই তারা ঠান্ডা পরিবেশেও তাদের শরীরের তাপ বৃদ্ধি করতে ও তাপমাত্রা রক্ষা করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হওয়ায় তাদের এন্ডোথার্মিক বলে। ঈগলের মতে, মেগাশার্কের শরীরের আকৃতি, তাদের সাঁতারের গতি এবং শক্তির প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে মেগালোডন আঞ্চলিকভাবে এন্ডোথার্মিক। এরা সারা পৃথিবী জুড়ে শীতল এবং উষ্ণ জলে শিকার করে বেড়াত তাই এদের উষ্ণ-শোণিত বলা যায়। একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় কুপার এবং সহকর্মীরা বলেছেন যে প্রাপ্তবয়স্ক ও. মেগালোডন এক সমুদ্র থেকে অন্য সমুদ্রে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সাঁতার কেটে বেড়াত।তারা এখনকার যে কোনও জীবন্ত হাঙর প্রজাতির চেয়ে দ্রুত সাঁতার কাটতে পারত এবং আজকের বৃহত্তম শিকারীদের সমতুল্য হাঙরকে শিকার হিসেবে সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করতে সক্ষম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × two =