বিশ্বের বেশির ভাগ নদী ক্রমশ শুকিয়ে আসছে

বিশ্বের বেশির ভাগ নদী ক্রমশ শুকিয়ে আসছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ নভেম্বর, ২০২৪

 

বিগত ৩৩ বছরের মধ্যে ২০২৩ সালে বিশ্ব জুড়ে নদীগুলোকে সবচেয়ে শুষ্ক অবস্থায় দেখা গেছে। ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও)-এর স্টেট অফ গ্লোবাল ওয়াটার রিসোর্সেস রিপোর্ট নদীর এই অবস্থার কথা প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে বিশ্ব জুড়ে জল সরবরাহের ওপর মারাত্মক চাপের কথা তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, বিগত টানা পাঁচ বছর নদীপ্রবাহ এবং জলাধারের প্রবাহ গড় মানের নীচে থাকায় মানুষ, কৃষি, বাস্তুতন্ত্রে জলের পরিমাণ কমেছে। ২০২৩ সাল সবচেয়ে গরম হওয়ায় তাপমাত্রাবৃদ্ধির পাশাপাশি খরা দেখা দিয়েছিল। অন্যান্য বছরের তুলনায় নদীতে জলের পরিমাণ কমে গিয়েছিল।
প্রতিবেদনটি জানাচ্ছে, জলের চাহিদা ক্রমবর্ধমান থাকলেও সময়ের সাথে সাথে শুষ্ক অঞ্চল বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক বছর ছিল ২০২৩ সাল, তারপরেই আসে ২০২১ ও ২০১৫ সাল। আলাস্কা ছাড়া উত্তর আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায় জলের স্তর গড় মানের নীচে নেমে গিয়েছিল। এশিয়ায় গঙ্গা ব্রহ্মপুত্রের মতো বৃহৎ নদী অববাহিকার প্রায় সমগ্র অঞ্চলে জলস্তর গড় মানের চেয়ে কম ছিল। পশ্চিম ও মধ্য এশিয়াতেও তাই। ভারতে দেখা গেছে জলাধারগুলোতে জল গড় মানের নীচে ছিল। কিন্তু শুধুমাত্র জলবায়ুর জন্যই তো জলাধারের জলের পরিমাণ বাড়ে-কমে না। কীভাবে এই জল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে তার ওপরেও এটা অনেকটা নির্ভরশীল।
ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণও অনেক স্থানে গড়ের নীচে ছিল- যেমন উত্তর আমেরিকার একটা বড়ো অংশে, পশ্চিম ও দক্ষিণ ব্রাজিলে, পর্তুগাল, স্পেন, ফ্রান্সের বেশিরভাগ জায়গায়, অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশে। আবার ইংল্যান্ডের কিছু অংশে, কানাডার কিছু স্থানে, ব্রাজিলের অন্যান্য স্থানে, এমনকি ভারতেও ভূগর্ভস্থ জলস্তর কিন্তু উচ্চ ছিল। এর জন্য দায়ী বেশি বৃষ্টিপাত। যেমন ভারতে বেশি বৃষ্টি হওয়াতে ভূগর্ভস্থ জল বেড়েছে। বর্তমানে, ৩৬০ কোটি মানুষ প্রতি বছর কমপক্ষে এক মাসের জন্য জলকষ্টে ভোগেন। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০৫০ সাল নাগাদ এইসব মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৫০০ কোটিতে পৌঁছোবে। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সঠিক পরিচালনার জন্য পরিমাপ করা জরুরি। ডব্লিউএমও-র মহাসচিব সেলেস্টেসাওলো বলেছেন এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য হল উন্নত তত্ত্বাবধান, তথ্য আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও মূল্যায়নে অবদান রাখা।