বেড়ালের পরজীবী ট্যাক্সোপ্লাজমার আছে অদ্ভুত ক্ষমতা

বেড়ালের পরজীবী ট্যাক্সোপ্লাজমার আছে অদ্ভুত ক্ষমতা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ মার্চ, ২০২৩

আদরে ভালোবাসায় জড়িয়ে থেকে বন্ধু বেড়াল অনেকসময়েই রোগাক্রান্ত করে আমাদের। মূলত যে পরজীবী দায়ী তার নাম ট্যাক্সোপ্লাজমা গোন্ডি। উষ্ণরক্তের প্রায় সমস্ত প্রাণীকেই এই পরজীবী আক্রমণ করতে পারে। কিন্তু নিজের প্রজননের তাগিদে কেবলই বেড়ালের শরীরকে ব্যবহার করে ট্যাক্সোপ্লাজমা।
কিন্তু কীভাবে এতও সহজে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এই পরজীবী, সেটা বেড়ালের দেহ হোক বা মানুষের? এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই একেবারে কোষের গভীরে গিয়ে তদন্ত করে দেখেছেন স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী আর্নে টেন হুইভ। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হল সম্প্রতি ‘সেল হোস্ট অ্যান্ড মাইক্রোব’ নামের পত্রিকায়।
গবেষক হুইভ বলছেন, ঐ পরজীবী একটা বিশেষ প্রোটিনের সাহায্যে দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে পাল্টে দিতে পারে। দেহের রোগপ্রতিরোধক কোষ (ইমিউন সেল) যখন একটা পরজীবীকে চিহ্নিত করে আর গিলে নেয় তখন কোষকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ঐ ইমিউন কোষ বা ফ্যাগোসাইটকে বলা হয় ম্যাক্রোফেজ। সাধারণভাবে পরজীবীকে গিলে নিয়ে এই ম্যাক্রোফেজ নট নড়নচড়ন অবস্থায় থাকে আর অন্য ইমিউন কোষগুলোকে আরও পরজীবীর সন্ধানে পাঠায়। কিন্তু আরেক প্রকারের ইমিউন কোষ হল ডেন্ড্রাইটিক কোষ। পরজীবীর একটা অংশকে নিয়ে তারা আবার লিম্ফ্যাটিক তন্ত্রে পৌঁছে যায় দেহকে সাবধান করতে।
কিন্তু ট্যাক্সোপ্লাজমার যখন ম্যাক্রোফেজে সংক্রমণ ঘটায়, তখন পরজীবীর দেহ থেকে GRA28 নামের এক প্রোটিন নিঃসৃত হতে থাকে। সাধারণত ডেন্ড্রাইটিক কোষ থেকে যে ধরণের রাসায়নিক ও নির্দেশ তৈরি হয় তেমন কাজই করে থাকে এই প্রোটিনও। ফলে ঐ ম্যাক্রোফেজ কোষকে হাইজ্যাক করে নিয়ে লিম্ফ্যাটিক তন্ত্রে পৌঁছে যায় পরজীবী। আর সেখান থেকেই গোটা দেহে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ।