ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন সম্ভব

ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন সম্ভব

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, আপনার চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য নিয়েই আপনার ব্যক্তিত্ব। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক না নেতিবাচক? রাস্তায় কোনো গাড়ি আপনার গাড়িকে কাটিয়ে চলে গেলে আপনি কী রেগে যান? নাকি ভাবেন অপরপক্ষের তাড়া আছে হয়তো বা হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাচ্ছে? আপনি কী শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য অপেক্ষা করেন, নাকি আপনি আগে থেকেই পরিকল্পনা করে থাকেন? উপরের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সম্মিলিতভাবে আপনার ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন করে। আপনার উত্তরগুলোর উপর নির্ভর করে, আপনাকে আশাবাদী, সহানুভূতিশীল বা নির্ভরযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। সাম্প্রতিক এই গবেষণা থেকে জানা যায় যে এই সব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মিলিয়ে মিশিয়ে পাঁচটি মূল বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে- ‘বিগ ফাইভ’।
১৯৩০-এর দশকের গোড়ার দিকে, মনোবিজ্ঞানীরা মানব প্রকৃতিকে বর্ণনা করতে অভিধান খুঁজে বিভিন্ন শব্দ একত্রিত করেছেন যেগুলোর অর্থ এক। যেমন একজন ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে “সদয়,” “চিন্তাশীল” এবং “বন্ধুত্বপূর্ণ”-র মতো শব্দ চয়ন করে তার চরিত্র বর্ণনা করার চেষ্টা করেছেন। তারা পাঁচটি ভাগের কথা বলেছেন- নিউরটিসিজম, বহির্মুখীতা, বিবেক বা চেতনা, সহমতাদর্শ, এবং গ্রহণযোগ্যতা। বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা অনুসারে, ব্যক্তিত্ব মানে আপনার পছন্দ, অপছন্দ নয়, আপনার রসবোধও নয়। ব্যক্তিত্ব বলতে আপনার মূল্যবোধ বা আপনি জীবনে কোন জিনিসকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, তা বোঝায় না। সহজভাবে বললে ব্যক্তিত্বের অর্থ হল জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আপনার চিন্তাভাবনা, অনুভূতি বা আপনার আচরণের ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে শেখা। এখন প্রশ্ন হল ব্যক্তিত্ব কী পরিবর্তন করা যায়? মনে রাখতে হবে ব্যক্তিত্ব একজন ব্যক্তির চিন্তা, অনুভূতি এবং আচরণকে বোঝায়। ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন করা কঠিন মনে হলেও মানুষ আসলে তার চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণ পরিবর্তন করতে পারে। তথ্য থেকে জানা যায় সাধারণভাবে, একজন ব্যক্তির জীবনকাল জুড়ে তার ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন হয়। মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার নেতিবাচক অনুভূতিগুলো হ্রাস পায় এবং সে আরও ইতিবাচক হয়ে ওঠে। তার চেতনা গড়ে ওঠে, সে ইতিবাচক সম্পর্কের উপর বেশি জোর দেয় এবং অন্যদের বিচার করার চেষ্টা করে না। যদিও এক্ষেত্রে মানুষে মানুষে পার্থক্য রয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল টেকনিক অনুসারে আপনার চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনতে হবে। আর তার প্রতিফলন ঘটবে আচরণে। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি এবং ক্রিয়াকলাপে ধারাবাহিক পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী অভ্যাসের দিকে নিয়ে যেতে পারে যা শেষ পর্যন্ত আপনার পছন্দসই ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলবে।