
২০২৪ সালে জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এক বছরে সর্বোচ্চ ৬৮৩টি প্রাণী প্রজাতি ও উপপ্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। যা ভারতের ইতিহাসে আগে কখনো হয়নি। এদের মধ্যে ৪৫৯টি সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতি এবং ২২৪টি ভারতে প্রথমবার নথিভুক্ত। কেরালা এই আবিষ্কারে শীর্ষে। সেখানে ১০১টি প্রজাতি (৮০টি নতুন এবং ২১টি প্রথম নথিভুক্ত) খুঁজে পাওয়া গেছে। এরপর রয়েছে কর্ণাটক (৮২), অরুণাচল প্রদেশ (৭২), তামিলনাড়ু (৬৩), পশ্চিমবঙ্গ (৫৬) এবং আন্দামান-নিকোবর (৪৩)। অন্যদিকে চণ্ডীগড়, দিল্লি, হরিয়ানা ও তেলেঙ্গানায় সবচেয়ে কম প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের দক্ষিণাঞ্চল থেকেই সবচেয়ে বেশি প্রজাতির খবর পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার(জেড এস আই) ১১০তম বার্ষিকীতে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে জেড এস আই -এর “অ্যানিম্যাল ডিসকভারিজ: নিউ স্পিসিস অ্যান্ড নিউ রেকর্ডস ২০২৪” প্রকাশ শুরু হওয়ার পর এই সংখ্যাটিই সর্বোচ্চ। প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ডঃ ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ধারাবাহিক গবেষণা ও আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। এরবিশেষ আকর্ষণ হলো হিমাচল প্রদেশে আবিষ্কৃত নতুন এক প্রজাতির সাপ —অ্যাঙ্গুইকুলাস ডিক্যাপ্রিওই। এটি মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশবিদ লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও-র নামাংকিত।
প্রতিবেদনটি পূর্ব হিমালয়, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ঝুঁকি মূল্যায়ন, সংরক্ষণ পরিকল্পনা ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। জীববৈচিত্র্য নজরদারি, জিনগত সংরক্ষণ এবং জনসমাজ উপাত্ত একত্র করে একটি জাতীয় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।
পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে বন্যপ্রাণীর ক্ষতি কমাতে সুড়ঙ্গপথ, সেতুপথ ও বনাঞ্চল সংযোগ প্রভৃতি বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা গড়ার কথা বলা হয়েছে। সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য জাতীয় স্তরের সংগ্রহশালা এবং লক্ষ্যভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনাও প্রস্তাবিত হয়েছে, বিশেষ করে লাক্ষাদ্বীপের জন্য।
তথ্যসূত্রঃ Animal Discoveries: New Species and New Records ; ZSI E-news(2024)