ভিটামিন ডি- অনেকসময় “সানশাইন ভিটামিন” নামেও পরিচিত। দীর্ঘকাল ধরে আমরা জেনে এসেছি ভিটামিন ডি পেশি এবং হাড় তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য অপরিহার্য ভিটামিন ডি-র প্রাকৃতিক উৎস হল সূর্যের আলো। দুধ, ডিম, পনিরের মতো সাধারণ খাবারে এই ভিটামিন থাকে। ভিটামিন ডি আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা কিছু উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার করেছেন। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় তারা জানিয়েছেন জীবনের প্রথম দিকে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি শরীরের ইমিউন সিস্টেমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ইঁদুরের মধ্যে কিছু জিনগত পরিবর্তন আনেন যাতে তারা প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি করতে অক্ষম হয়। তারপর তারা সেই ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করেন। তারা দেখেন যে থাইমাস নামের একটি ছোটো অঙ্গ যা আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে প্রশিক্ষিত করে সেই অঙ্গটি পরীক্ষিত ইঁদুরের মধ্যে দ্রুত বুড়িয়ে যায়। এর ফলে ইঁদুরের শরীরে স্ব-আক্রমণকারী ইমিউন কোশগুলো ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। আমরা জানি যে থাইমাস আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধী টি কোশকে নিয়ন্ত্রণ করে যাতে তারা শরীরের সুস্থ স্বাভাবিক কোশ আক্রমণ না করে। আর এই প্রক্রিয়ার সাথে ভিটামিন ডি যুক্ত। ভিটামিন ডি তৈরি করতে অক্ষম ইঁদুরগুলোর থাইমাস ছোটো হয়ে যায় এবং তার কোশের সংখ্যা হ্রাস পায়। এছাড়াও অঙ্গটিতে অকাল বার্ধক্যের জৈবিক লক্ষণ দেখা দেয়। অটোইমিউন নিয়ন্ত্রকের মাত্রাও কমে যায়। ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার কারণে অটোইমিউন রোগগুলো বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন ডি সম্পূরকগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনও বিজ্ঞানীদের মধ্যে কিছু বিতর্ক রয়েছে, যদিও বলা হয়ে থাকে কোনও ব্যক্তির এই ভিটামিনের ঘাটতি থাকলে – স্বাস্থ্যের কিছু ক্ষেত্রে এটি উপকারী হতে পারে। তবে শরীর যদি প্রতিদিনের সূর্যালোক থেকে বঞ্চিত হয় বিশেষ করে আমাদের জীবনের প্রাথমিক বছরগুলোতে তবে আমাদের ইমিউন সিস্টেম সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।