ভিডিও গেম খেলে শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলছে বহু মানুষ

ভিডিও গেম খেলে শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলছে বহু মানুষ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

কানে হেডফোন লাগিয়ে গেম খেলছেন নাকি গান শুনছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা? একবার ভেবে দেখেছেন এতে আপনার কানের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা? সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কানে হেডফোন লাগিয়ে কাটিয়ে দিলে, আপনার শ্রবণশক্তির ক্ষতি হতে পারে। আধুনিক পৃথিবীতে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে, তা নিয়ে সংশয় নেই। অতিমারিতে তালাবন্ধ বিশ্বে অতি প্রয়োজনীয় কাজগুলো সচল ছিল এর মাধ্যমেই। পরবর্তী কালেও যে সেই নির্ভরতা কমে যাবে না, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। কিন্তু এর ক্ষতিকর প্রভাবটি উপেক্ষা করার নয়।
আমরা যখন ভিডিও গেম খেলি সেই অভিজ্ঞতার একটি প্রধান অংশ হল শব্দ বা সাউণ্ড। গেম খেলা এবং আমাদের শ্রবণশক্তি নিয়ে আগে বিশেষ কোনো গবেষণা হয়নি। সম্প্রতি গবেষকের একটি দল নয়টি ভিন্ন দেশের ৫০,০০০ -এরও বেশি ব্যক্তিকে নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখার চেষ্টা করেছেন শ্রবণশক্তি হ্রাস অথবা টিনিটাস এবং ভিডিও গেম খেলার মধ্যে কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা। গবেষণাটি কম্পিউটার, মোবাইল গেমস, গেমিং সেন্টারে গিয়ে খেলা প্রভৃতি মাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিষয়টা শুধু শব্দ নিয়ন্ত্রণের নয়। শব্দের মাত্রা এবং সময় অর্থাৎ কতক্ষণ শোনা হচ্ছে উভয়ই আমাদের কানে প্রভাব ফেলতে পারে। শব্দের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে আমাদের কানের সেই শব্দ নেওয়ার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়। সুতরাং টানা তিন ঘন্টার গেমিং সেশন একই স্তরে ১৫-মিনিটের সময়ের একটা গেম খেলার চেয়ে অনেক বেশি স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রাপ্তবয়স্করা সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা সময়ের জন্য প্রায় ৮০ ডেসিবেল শব্দের মাত্রা নিরাপদে সহ্য করতে পারে। কিন্তু শব্দের মাত্রা ৯০ ডিবি হলে সেই ব্যক্তিটি তার শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকির আগে সপ্তাহে চার ঘণ্টা ওই শব্দ নিতে পারে। আমাদের কান ৯৫ ডিবি শব্দ শুধুমাত্র এক ঘন্টা পনেরো মিনিটের জন্য সহ্য করতে পারে। সুতরাং, এটি উদ্বেগজনক, কারণ গবেষণা অনুসারে ভিডিও গেম যেমন হেডফোন সহযোগে শুটিং গেম খেলার সময় শব্দের গড় মাত্রা থাকে ৮৮.৫ থেকে ৯১.২ ডিবি। বিএমজি পাবলিক হেলথে প্রকাশিত এই গবেষণা পরামর্শ দেয় যে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাপনার উপর অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। গেমিংয়ের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন আবার মানুষের মধ্যে শ্রবণসংক্রান্ত বিষয় প্রচারে সহায়তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + 20 =