মঙ্গলের মাটির নিচে কি থাকতে পারে প্রাচীন ব্যাকটেরিয়া?

মঙ্গলের মাটির নিচে কি থাকতে পারে প্রাচীন ব্যাকটেরিয়া?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৭ নভেম্বর, ২০২২

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ সহ্য করতে পারে কিছু বিশেষ জাতের ব্যাকটেরিয়া। মঙ্গলের মাটির নিচে কোটি কোটি বছর তারা দিব্বি অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সক্ষম। হয়তো এখনও সেসব ব্যাকটেরিয়া বেঁচে আছে লালগ্রহে।
মঙ্গলগ্রহের পরিবেশ কেবলমাত্র ঠাণ্ডা আর শুকনো যে তা’ই নয়। তার উপরে মহাজাগতিক রশ্মি আছড়ে পড়ে প্রতিমুহূর্তে। এছাড়াও আহিত কণা আর অন্য ধরনের বিকিরণের ঝামেলা তো রয়েইছে। বিগত অনেক গবেষণাতেই দেখা গেছে অণুজীবের টিকে থাকার প্রবণতা অনেকটাই বেড়ে যায় বিশুষ্কীকরণ পদ্ধতিতে। কারণ এই প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত বিক্রিয়াশীল অক্সিজেন-বাহী রাসায়নিকের প্রভাবে ব্যাকটেরিয়ার দেহের প্রোটিন আর ডিএনএ নষ্ট হয় না। এতে অন্য সব দরকারি উপাদানও সুরক্ষিত থাকে কোষের মধ্যে।
কিন্তু মঙ্গলের এমন চরম আবহাওয়াতে কীভাবে ব্যাকটেরিয়া নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারে, তা খতিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন গবেষকরা। সেই উদ্দেশ্যেই পাঁচটা প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া আর একটা ইস্টের প্রজাতি নিয়ে তাদেরকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে বিশুষ্ক করা হয়। তারপর -৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সঞ্চয় করে রাখা হয়েছিল ঐ অণুজীবদের। শেষে তাদের উপর কৃত্রিমভাবে বিকিরণ ফেলা হয়।
পরীক্ষা বলছে, বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়াই হয়তো কয়েক হাজার বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই পরিস্থিতিতে থাকলে। কিন্তু একটা প্রজাতি নাকি ২৮০ মিলিয়ন বছর টিকে থাকতে পারে। সেটার নাম – ডেইনোকক্কাস রেডিওডুরান্স।
ভৌত রসায়নবিদ ব্রায়ান হফম্যান আর ওনার দল গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে গত ২৫শে অক্টোবর, অ্যাস্ট্রোবায়োলজি নামক পত্রিকায়।
রেডিওডুরান্স প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া বিকিরণের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে পারে কারণ তাদের কোষে ক্রোমোজোম আর অন্য জিনগত উপাদানের একাধিক কপি থাকে। সাথে ম্যাঙ্গানিজ-বাহী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে ডিএনএ-র ক্ষতি করা রাসায়নিকের প্রভাব নির্মূল করতে পারে এই ব্যাকটেরিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − twelve =