বুকের মাঝে কি সুধা আছে মঙ্গলের? হাঁটি হাঁটি পা পা করে পথ চলে লালগ্রহের মাটি হাতরে চলেছে নাসার পারসিভারেন্স রোভার। মঙ্গল গ্রহের মাটি পাবলিভিয়ারেন্সের হাত ধরেই পৃথিবীতে আসার কথা ঠিক দশ বছর পরে ২০৩১ সালে। আর সেই মাটির অনুকনা বিচার বিশ্লেষণ করে মর্তের বিজ্ঞানীরা ঠিক করবেন মঙ্গলের বয়স কত? কবে কবে সেখানে প্রলয় এসেছিল? কবেই বা তা জ্বলতে জ্বলতে ক্লান্ত হয়ে ঠাণ্ডা হয়ে গেল? আদৌ কখনও সেখানে প্রাণ ছিল কিনা? পৃথিবীতে সংসার করতে করতে মানুষ ক্লান্ত। এক ঘেয়ে হয়ে গেছে এই গ্রহ। খুঁজেছে নতুন বাসা চির পরিযায়ী মানুষ, নতুন বাস যোগ্য ঠাঁই। মঙ্গলই কি হবে সেই ঠাঁই? প্রশ্নের উত্তর পেতে আরও কতদিন লাগবে জানা নেই। কিন্ত প্রায় চল্লিশ লক্ষ বছর আগে গ্রহটাকে প্রবল জোরে ধাক্কা মেরে পেট ফুটো করে দেওয়া একটি গহ্বর ধরেই মানুষ মঙ্গলে ঢোকার চেষ্টা করছে- ট্রয়ের ঘোড়ায় মতো। নাম তার ‘জাজেরো গহ্বর’। সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে পারসিভারেন্স। রোবোটিক এই বিজ্ঞানী ‘জ্যোতির্জীববিজ্ঞানের’ নতুন দিগন্ত খোলার চেষ্টায় ঘাম ঝরাচ্ছে। ছ’ চাকার গাড়িতে গন্ধ শুঁকে শুঁকে সেই জায়গা খুঁজে বার করতে চাইছে যেখানে সব থেকে বেশী খবর আছে। মঙ্গলে একসময় অগ্নুৎপাত হয়েছিল, ঝড়, মেঘ, ধুলোবালি উড়েছিল, জল জমে হ্রদ হয়েছিল- ক্ষণিকের জন্য হলেও প্রানের স্পন্দন দেখা দিয়েছিল। মানুষ যাবার আগে সেটাই বুঝতে চাইতে নাসার পাঠানো পারসিভারেন্স।
হাত বাড়িয়ে মুঠোর মধ্যে মাটি তুলতে ৬ই আগস্ট প্রথম চেষ্টায় সফল হয়নি পারসিভারেন্স। আঁচরে ধুলো বালিও আসেনি। ক্যালিফোর্নিয়ায় জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা নাসার সঙ্গে মিলে যে সাফল্য খুঁজছেন, তা প্রথম চেষ্টায় অসফল। আর তাতে দমে যাবার কিছু নেই। এভাবেই বিজ্ঞান এগোয়। অতএব পারসিভারেন্সের পরের চেষ্টা শুরু হয়েছে। এমনটাই আমাদের দেশেও শুরু হয়েছে বিক্রমের চাঁদের বুকে ২০১৯ সালে আছড়ে পড়ার সময় থেকে। যেমনটা চেয়েছিলাম আমরা- তেমনটা হয়নি। কিন্তু আমাদের প্রজ্ঞান রোভার চাঁদে পথ হাঁটছে। ২০২২ সালে চন্দ্রায়ন-৩ অভিযান হবে। মঙ্গল চাঁদের থেকে কিছুটা দূরে।