মনুষ্যসৃষ্ট বনভূমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ চাষ ফলদায়ক

মনুষ্যসৃষ্ট বনভূমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ চাষ ফলদায়ক

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২৬ নভেম্বর, ২০২৩

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মন্থর করতে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সাস্টেনেবল ডেভেল্পমেন্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য গাছ লাগানো অত্যাবশ্যক। পুনরায় স্থাপন করা অরণ্য , তার মাটিতে, ঝোপঝাড়ে এবং গাছের মধ্যে কার্বন সঞ্চয় করে। মিশ্র গাছের অরণ্য কার্বন সঞ্চয় করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর, কারণ পরিপূরক বৈশিষ্ট্য সহ বিভিন্ন প্রজাতি সামগ্রিক কার্বন সঞ্চয় বাড়াতে পারে। একক-প্রজাতির অরণ্যের তুলনায়, মিশ্র প্রজাতির অরণ্যগুলি কীটপতঙ্গ, রোগ এবং জলবায়ুগত ব্যাঘাতের ক্ষেত্রে বেশি স্থিতিস্থাপক, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদী কার্বন সঞ্চয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। মিশ্র প্রজাতির অরণ্যে অন্যান্য ইকোসিস্টেম পরিষেবার সরবরাহও বেশি, এবং তারা নানা ধরনের জীববৈচিত্র্য সমর্থন করে।
যদিও বিভিন্ন গাছ সম্পন্ন অরণ্যের সুবিধাগুলি সুপরিচিত, তবুও অনেক দেশ অরণ্য পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে মনোকালচার প্ল্যান্টেশন বা এক ধরনের গাছ চাষের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই অনুশীলনের পরিপ্রেক্ষিতে, বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল মিশ্র রোপণ করা বনের কার্বন স্টকের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সর্বোত্তম-সম্পাদিত মনোকালচার অরণ্যের কার্বন স্টকের সাথে, এবং গড় মনোকালচারের কার্বন স্টকের তুলনা করেছেন। তাদের কাজ ফ্রন্টিয়ার্স ইন ফরেস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
গবেষণায় মূল্যায়ন করা মিশ্র রোপিত বনে দুটি থেকে ছয় প্রজাতির গাছের সমৃদ্ধি দেখা হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা যে ডেটা সেট নিয়ে কাজ করেছেন তাতে, চার-প্রজাতির গাছের মিশ্রণ সবচেয়ে কার্যকর কার্বন সিঙ্ক হিসেবে দেখা গেছে। দুটি গাছের প্রজাতির মিশ্রণে সৃষ্ট অরণ্যে একক গাছের অরণ্যের তুলনায় মাটির উপরে কার্বনের ভাণ্ডার বেশি মজুত থাকে এবং সেখানে ৩৫% পর্যন্ত বেশি কার্বন সঞ্চিত হয়। ছয়টি প্রজাতির বনভূমিতে মনোকালচারের তুলনায় কোন সুস্পষ্ট সুবিধা গবেষকরা দেখতে পাননি।গবেষকরা দেখান যে বনের বৈচিত্র্য কার্বন সঞ্চয় বাড়ায়। সব মিলিয়ে, মিশ্র অরণ্যে মাটির উপরে কার্বনের মজুদ ছিল গড় মনোকালচারের তুলনায় ৭০% বেশি। গবেষকরা আরও দেখেছেন যে মিশ্র অরণ্যে বিশেষ করে উচ্চ ফলনশীল প্রজাতির দ্বারা গঠিত অরণ্যে বাণিজ্যিক মনোকালচারের তুলনায় ৭৭% বেশি কার্বন মজুত রয়েছে।
ডাঃ এমিলি ওয়ার্নার, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের বাস্তুবিদ্যা এবং জীববৈচিত্র্য বিজ্ঞানের পোস্টডক্টরাল গবেষক বলেছেন, কার্বন সঞ্চয়ের সুবিধাগুলি বৈচিত্র্য পরিবর্তন যেমন অবস্থান, ব্যবহৃত প্রজাতি এবং অরণ্যের বয়সের মতো কারণের অনুযায়ী কীভাবে হয় তা অন্বেষণ করা জরুরি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − eleven =