চিলির আটাকামা মরুভূমিতে প্রায় ৭৫ কিমি এলাকা জুড়ে এক দশকের কিছু আগে প্রথম নজরে এসেছিল ছড়িয়ে থাকা রাশি রাশি কাচের টুকরো। টুকরো গুলি ছিল অদ্ভুত আকারের, একটির সাথে অন্যটির মিলো ছিল না একেবারেই। তাই উদ্রেক হয় কৌতুহলের – কোথা থেকে এলো এই কাচ টুকরোর আবর্জনা? আমেরিকার রোড আইল্যান্ডে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিকদের গবেষণা জানিয়েদিল এই রাশি রাশি কাচে আছে এমন সব পদার্থ যা পৃথিবীতে যেসব পদার্থের অস্তিত্বই নেই। ৩রা নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা জিওলজি তে প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী এই কাচ পৃথিবীতে তৈরি হয়নি। পৃথিবীর বাইরের কোনো গ্রহ – গ্রহানু থেকে এসে থাকবে। আর তা নিয়ে এসেছিল সুবিশাল কোনো উল্কাখন্ড। বায়ু এবং তাপ বিকিরণের ফলেই রাশি বাশি কাচের বিভিন্ন আকৃতি সৃষ্টি হয়েছে। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভূতত্ত্ববিদ পিটার শ্যুলজ বলেন, এবড়োখেবড়ো, মসৃণ, দোমড়ানো – এসব নানা আকৃতি হয়েছে অন্তত ১২ হাজার বছর আগের কোনোও ঘটনায়।
শ্যুলজ ও সহযোগীরা প্রায় ৩০০টি কাচের টুকরোর নমুনা সংগ্রহ করে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের নীচে রেখে পরীক্ষা করেন। স্পেকট্রোস্কোপি পদ্ধতিতে জানার চেষ্টা করেন কাচগুলি কোন রাসায়নিক পদার্থে গঠিত। এই কাচে পাওয়া গেছে জারকন্স এর মতো পদার্থ। প্রচণ্ড তাপে( নুন্যতম প্রয়োজনীয় ১৬৭০ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ দাবানল ইত্যাদিতেও এত তাপ সৃষ্ট হয় না) জারকন্স রুপান্তরিত হয়ে খনিজ পদার্থ ব্যাডেলেইটে পরিণত হয়। এছাড়াও পাওয়া গেছে কিউবানাইট। পৃথিবীতে এই খনিজ নেই। ২০০৪ এ নাসার একটি মিশন ‘ধুমকেতু ওয়াইল্ড -২’ তে রি খনিজের সন্ধান পায়। সবমিলিয়ে শ্যুলজদের নতুন গবেষণা অনুযায়ী এই কাচ পৃথিবীর বাইরের ভিন জগতের।