মশা মারতে মশা দাগা

মশা মারতে মশা দাগা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩১ মে, ২০২৪

ম্যালেরিয়ার কোপে প্রতি বছর বিশ্বে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। বিশেষ করে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া এক প্রকার মহামারীর চেহারা নিয়েছে। অজস্র মানুষের মৃত্যু নাড়া দিয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী মহলকে। ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে ২৩ মে, ২০২৪ সালে পূর্ব আফ্রিকার জিবুতিতে জেনেটিকালি মডিফাইড বা জিনগভাবে পরিবর্তিত মশা ছাড়া হয়েছে। অক্সিটেক লিমিটেড, জিবুতির সরকার এবং একটি বেসরকারী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন মিউচুয়ালিসের একটি পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসাবে জিবুতির শহরতলি এলাকা আম্বৌলিতে এই ধরনের মশা ছাড়া হয়। অ্যানোফিলিস স্টিফেনসি, একধরনের অনুপ্রবিষ্ট আগ্রাসী প্রজাতির মশা। এই মশার বিস্তার রোধ করতে দু বছর আগে শুরু হয় ‘জিবুতি ফ্রেন্ডলি মসকুইটো প্রোগ্রাম’। ২০১২ সালে, যখন আফ্রিকাতে অ্যানোফিলিস স্টিফেনসি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল, জিবুতি অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার ২৭টি ঘটনার কথা রিপোর্ট করা হয়েছিল। ২০২০ সাল নাগাদ, ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যাটি বেড়ে ৭৩,০০০ ছাড়িয়েছে। এই অনুপ্রবিষ্ট আগ্রাসী প্রজাতির মশা দক্ষিণ এশিয়া এবং আরব উপদ্বীপ থেকে আফ্রিকায় চলে আসে। ছড়িয়ে পড়ে আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশে- ইথিওপিয়া, সুদান, সোমালিয়া এবং নাইজেরিয়া। অ্যানোফিলিস স্টিফেনসি শহুরে পরিবেশের সাথে ভালোভাবে খাপ খায়, সেখানেই তারা বংশবিস্তার করে । এই শহরাঞ্চল আক্রমণকারীদের মোকাবেলা করার জন্য, অক্সিটেক, মশার বিরুদ্ধে মশাকেই ব্যবহার করে। তারা এমন কিছু জিনগতভাবে পরিবর্তিত পুরুষ মশা ছেড়েছে যারা একটি বিশেষ জিন বহন করে, আর এই জিন শৈশব অবস্থা থেকেই স্ত্রী মশাদের প্রাপ্তবয়স্ক হতে বাধা দেয়। পদ্ধতিটি স্ত্রী মশাকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে কারণ ম্যালেরিয়া সংক্রমণের জন্য প্রধানত দায়ী স্ত্রী মশারা। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা কামড়ালে তার লালার সঙ্গেই আমাদের শরীরে ঢোকে ম্যালেরিয়ার জীবাণু। পুরুষ মশা কামড়ায় না তাই ম্যালেরিয়া ছড়াতে পারে না। স্ত্রী মশার জনসংখ্যা হ্রাস করার মাধ্যমে, বিজ্ঞানীরা এই রোগের বিস্তার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার আশা করছেন।