মস – পৃথিবীর পক্ষে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

মস – পৃথিবীর পক্ষে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১২ মে, ২০২৩

বনে বা চারণভূমিতে সবুজ কার্পেটের মতো ছেয়ে থাকে মস। নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোলজিস্ট, ডেভিড এল্ডরিজ জানিয়েছেন, এর গুণাগুণ দেখে তারা অবাক হয়ে গেছেন।
আটটা বাস্তুতন্ত্রের ১০০ ধরনের পরিবেশ থেকে মসের নমুনা সংগ্রহ করে তারা দেখেছেন, যে ধরনের পরিবেশে মস থাকে, তাতে পৃথিবীতে প্রায় ৯.৪ মিলিয়ন বর্গ কিমি জায়গা জুড়ে মস পাওয়া যাবে। এই জায়গা, কানাডা বা চিনের সমান।
বর্তমান পৃথিবীতে যে সব গাছপালা পাওয়া যায়, তাদের তুলনায় মস আকৃতিগত দিক দিয়ে অনেক সরল। জাইলেম বা ফ্লোয়েম, যা গাছের পরিবহনতন্ত্র বা যার মধ্যে দিয়ে গাছে জল সংবহন হয় তা মসের মধ্যে থাকে না। মস যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাতা দিয়ে ঢাকা থাকে তা এককোশী। আর মস বায়ুমন্ডলে থেকে সরাসরি জল সংগ্রহ করে।
অস্ট্রেলিয়ার শুকনো অঞ্চলে অবস্থিত মসের ক্ষেত্রে দেখা যায় জলের অভাবে এরা গুটিয়ে যায়, কিন্তু মরে যায় না। ১০০ বছর পরেও প্যাকেট থেকে মস বার করে তাকে জলে দিয়ে দেখা গেছে, মসের মধ্যে প্রাণ ফিরে এসেছে, কিন্তু অন্যান্য গাছের ক্ষেত্রে এটা সম্ভব নয়।
মস আছে এমন মাটির সঙ্গে মস না থাকা মাটির তুলনা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মস থাকা মাটির মধ্যে পরিপোষক পদার্থ যেমন নাইট্রোজেন, ফসফরাস, জৈব পদার্থের চক্র তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয়। তার সাথে মস কার্বনের মতো পরিপোষক পদার্থ সঞ্চিত করেও রাখে। বিজ্ঞানীদের ধারণা মস অন্তত ছয় গুণ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করতে পারে। আর একটা দিক হল, মস থাকা জমিতে প্যাথোজেন কম থাকে এবং এই প্যাথোজেন অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধীও নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − 9 =