মহাকাশের কণার সাহায্যে সাইক্লোনের গভীরে

মহাকাশের কণার সাহায্যে সাইক্লোনের গভীরে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঝরে পড়ে মহাকাশ থেকে বিভিন্ন কণা। তাদের মধ্যে অন্যতম মিউওন। এবার এই কণার সাহায্যেই সাইক্লোনের ভেতরকার ত্রিমাত্রিক গঠন জানতে পারা যাবে, এমনই দাবী বিজ্ঞানীদের।
মহাজাগতিক রশ্মি থেকে সৃষ্টি হয় মিউওন। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরের অংশে সৃষ্টি হওয়া সাইক্লোনের মধ্যে কী কী ঘটে যাচ্ছে তার হদিশ দেবে এই কণা। জাপানে এমনই এক পরীক্ষামূলক গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্টিফিক রিপোর্টস পত্রিকায়। গবেষকদের আশা, কেবল ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারা যাবে তা’ই নয়, বরং আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও কাজে লাগতে পারে এই পদ্ধতি।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানী হিরোয়ুকি তানাকা বলছেন, মহাজাগতিক রশ্মি একপ্রকার স্থায়ী প্রাকৃতিক উপাদান যা প্রতিদিন প্রত্যেক ঘণ্টায় ব্যবহার করা যেতে পারে। ঝড়ের মধ্যে বায়ুচাপ আর ঘনত্বের পরিবর্তনের সাথে সাথে মিউওন কণার সংখ্যাতেও বদল ঘটে। সুতরাং কোনও উপযুক্ত ডিটেক্টরের দ্বারা যদি পরিমাপ করা যায় এই কণার সংখ্যা, তাহলে কাজে লাগতে পারে এই পরিবর্তন। যেমনটা জাপানের কাগোশিমায় আছে। প্রোফেসর তানাকা ও তাঁর সহকর্মীরা সাইক্লোনের ভেতরে বায়ুর ঘনত্ব নিয়ে একটা খসড়া ত্রিমাত্রিক ম্যাপ প্রকাশ করেছেন। দেখা যাচ্ছে কম বায়ুচাপের অংশগুলো কীভাবে একটা ঘূর্ণিঝড়ের গঠন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
মিউওন কণা ইলেকট্রনের মতোই। যদিও ইলেকট্রনের তুলনায় প্রায় ২০০ গুণ ভারী এই কণা। এরা অস্থায়ী প্রকৃতির। যথেষ্ট সময় পেলে মিউওন কণা ভেঙে গিয়ে ইলেকট্রন আর নিউট্রিনো কণার জন্ম দেয়। বায়ুর চাপ বাড়লে এদের ঘনত্বও বাড়তে থাকে। ফলে তাদের ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তানাকা ও তাঁর সহকর্মীরা হিসেব করে দেখিয়েছেন বায়ুর চাপ ১% বৃদ্ধি পেলে, উপরের বায়ুস্তর থেকে নীচে নামা মিউওনের সংখ্যা ২% কমে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 11 =