মহাবিশ্ব এক আশ্চর্য যজ্ঞশালা। নক্ষত্রের জন্ম মৃত্যু, ব্ল্যাকহোলের দাপট, সুপারনোভা বিস্ফোরণ, ধূমকেতু – সব মিলিয়ে এক স্বপ্নের দৃশ্য যেন। কিন্তু নিখুঁত সরলরেখা, বৃত্ত, গোলক কিংবা চতুর্ভুজের দেখা পাওয়া বিরল বিষয়ই বটে। এবার দুটো নিউট্রন তারার মধ্যে সংঘর্ষে একটা ঠিকঠাক গোলক দেখতে পাওয়া গেল। কপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশবিজ্ঞানীরা অন্তত তেমনটাই দাবি করছেন। নেচার পত্রিকায় বিস্ফোরণের বিশদ বিবরণ তাঁরা প্রকাশ করলেন সম্প্রতি।
দুটো নিউট্রন নক্ষত্র একে অপরকে প্রদক্ষিণ করতে করতে যখন শেষমেশ তাদের মুখোমুখি ধাক্কা হয়, সেই বিরাট বিস্ফোটকে কিলোনোভা বলা হয়। এই বিস্ফোরণে আস্ত একটা কৃষ্ণগহ্বর সৃষ্টি হতে পারে, কিংবা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরমাণু। চরম ভৌত পরিস্থিতি তৈরি হয়। অর্থাৎ, তাপমাত্রা অত্যাধিক বেশি, চাপ বেশি, বিস্ফোরণে নির্গত আলোর অযুত তেজ কিংবা ভয়ঙ্কর সব মহাজাগতিক রশ্মির ছটা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, কিলোনোভা বিস্ফোরণে সোনা, প্লাটিনাম, ইউরেনিয়ামের মতো পর্যায়সারণীর সবচেয়ে ভারি মৌলগুলোর জন্ম হয়।
কিন্তু এই ধ্বংসাত্মক ঘটনার বিষয়ে এখনও অবধি মহাকাশ-গবেষকদের কাছে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। ১৪০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে ঘটে যাওয়া এই নিউট্রন নক্ষত্রের বিস্ফোরণটা প্রথম নজরে আসে কপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলবার্ট স্নেপেন আর ডারাচ ওয়াটসনের। কিলোনোভার পরিসরটা একটা প্রায় পূর্ণ গোলকের মতোই। কিন্তু এটাই একমাত্র তথ্য নয়। এখনও সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা এই বিস্ফোরণের খুঁটিনাটি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।