মহাবিশ্বের অন্ধকার পরিমাপ করল মহাকাশযান

মহাবিশ্বের অন্ধকার পরিমাপ করল মহাকাশযান

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিউ হরাইজনস, সবচেয়ে উন্নত মানব-নির্মিত যন্ত্র, যা সূর্য থেকে ৬০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট (১ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট = ১৪৯ ৫৯৭ ৮৭০ ৭০০ মিটার, যা পৃথিবী ও সূর্যের কেন্দ্রের গড় দূরত্ব) অবধি দূরত্বে চলে যেতে সক্ষ্ম হয়েছে। আর সূর্যের আলোর ছটা এড়িয়ে এই মহাকাশযান মহাবিশ্বের অভূতপূর্ব ছবি তুলতে পারছে। ২০১৫ সালে প্লুটো এবং কুইপার বেল্টের বিভিন্ন বস্তু, আর সৌরজগতের বাইরের বস্তুর অধ্যয়নের জন্য নাসার নিউ হরাইজনস প্রোব পাঠানো হয়েছিল। সৌরজগত থেকে মহাকাশকে দেখা একটা নোংরা কাচের পাত্রের কাচের ভেতর দিয়ে একটা ঘর দেখার সমান। কারণ আমাদের চারদিকের মহাকাশ আন্তঃগ্রহের মধ্যে নানা ধূলিকণা আর গ্যাসে ঘেরা তার সাথে সূর্যের আলোর ছটায় পরিপূর্ণ। এই মিশন মহাবিশ্বের আলো ধরার সেরা সুযোগ করে দিয়েছে। সূর্য থেকে ৬০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিটে, অনেক ধুলো থাকলেও সূর্যের আলো সেখানে যথেষ্ট ক্ষীণ হয়ে যায়, আর তাই মহাজাগতিক অপটিক্যাল পটভূমি পরিমাপ করা যায়।
এই যন্ত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের দৃশ্যমান ক্ষীণ আলোর পটভূমিতে সত্যিকারের অন্ধকার পরিমাপ করেছেন। এই গবেষণা বলছে, আমরা যে দৃশ্যমান আলো দেখতে পাই তা ছায়াপথে সৃষ্টি হয়। আর বর্তমানে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে অপরিচিত, এমন কোনো উত্স থেকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উত্পাদিত আলো আসেনা, তা প্রমাণিত হয়েছে। মহাজাগতিক অপটিক্যাল পটভূমির কারণ হল ছায়াপথের অস্তিত্ব। ছায়াপথের বাইরের দিকে তাকালে, শুধু অন্ধকার দেখা যায়, আর কিছুই দেখা যায়না। গবেষকরা ২০২১ সালে প্রথম যখন অপটিক্যাল পটভূমি মাপতে চেয়েছিলেন, তখন তা ভুল এসেছিল। এত উজ্জ্বলতা উঠে এসেছিল যার ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০২৩ সালে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির প্ল্যাঙ্ক মিশনের সূত্রে দেখা গিয়েছিল, আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের ধূলোর অস্তিত্ব গণনায় আনা হয়নি। কিন্তু বর্তমান মিশনের গণনা বলছে, ভৌতবিজ্ঞানের সূত্র অনুযায়ী যতটা আলো আসার কথা, সেই পরিমাণ আলোই আসছে। এই গবেষণা অ্যাস্ট্রোফিসিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।