মাইক্রোরোবটের ঝাঁক ব্যবহারে প্লাস্টিক কণা ও জীবাণু নাশ

মাইক্রোরোবটের ঝাঁক ব্যবহারে প্লাস্টিক কণা ও জীবাণু নাশ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ মে, ২০২৪

ফেলে দেওয়া খাবারের প্যাকেট, শিশুদের ভাঙা খেলনা, বা অন্যান্য প্লাস্টিকের বর্জ্য মাইক্রোপ্লাস্টিকে ভেঙে গিয়ে সমুদ্র, নদী, নালায় মিশলে তা পরিষ্কার করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। তার সাথে প্লাস্টিকের এই ক্ষুদ্র কণাগুলো রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকেও আকৃষ্ট করে। এসিএস ন্যানোতে প্রকাশিত গবেষণায়, গবেষকরা মাইক্রোস্কেল রোবট বা মাইক্রোরোবটের ঝাঁক বর্ণনা করেছেন যা জল থেকে প্লাস্টিক এবং ব্যাকটেরিয়ার টুকরো নিষ্কাশন করেছে। পরে, এই দূষিত মাইক্রোরোবটের দূষণ পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছিল।
৫ মিলিমিটার বা তার কম আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা প্লাস্টিক দূষণের সমস্যায় আরেকটা মাত্রা যোগ করে। কারণ প্রাণীরা সেগুলি খেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে, আবার এমন খাদ্য শৃঙ্খলে সেই কণা চলে যেতে পারে যা মানুষ খেতে পারে। উপরন্তু মাইক্রোপ্লাস্টিক নিজেই একমাত্র উদ্বেগের বিষয় নয়, এই কণাগুলো প্যাথোজেন সহ ব্যাকটেরিয়াকে আকৃষ্ট করে, যা আমাদের খাদ্যজালে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জল থেকে জীবাণু এবং প্লাস্টিক দুটোই অপসারণ করার জন্য, অ্যামেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির মার্টিন পুমেরা এবং সহকর্মীরা মাইক্রোস্কেল রোবোটিক সিস্টেম ব্যবহার করার কথা ভাবছেন। এটা খুব ছোটো ছোটো উপাদান নিয়ে গঠিত যেগুলো একসাথে অনেকটা মাছের ঝাঁকের অনুকরণে কাজ করে। এই মাক্রোরোবটগুলো এক একটা ২.৮ মাইক্রোমিটার মাপের। ধনাত্মক আয়নযুক্ত পলিমারকে চৌম্বকীয় মাইক্রোকণার সাথে যুক্ত করা হয়েছে, যা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে একসাথে ঝাঁক বেঁধে চলা ফেরা করতে পারে। এই পলিমার প্লাস্টিক ও জীবাণু উভয়কেই আকর্ষণ করে। এদের গতিবিধি ও গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পরীক্ষাগারে ট্যাঙ্কের জলে আধ ঘণ্টায় এই রোবোটের ঝাঁক নিউমোনিয়া ও অন্যান্য রোগ জীবাণুর ৮০ শতাংশ ও সমপরিমাণে প্লাস্টিক অপসারণ করেছে।
এরপর গবেষকরা চুম্বকের সাহায্যে মাইক্রোরোবোটগুলো সংগ্রহ করে আল্ট্রাসাউন্ড দিয়ে ব্যাকটেরিয়া পৃথক করেছেন। অবশেষে জীবাণুগুলো আল্ট্রাভায়োলেট বিকিরণের সাহায্যে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এরপর এই মাইক্রোরোবটগুলো আবার আগের মতো কাজ করতে সক্ষম হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − eight =