খুব দক্ষ আর্কিটেক্ট যেমন সুচারু ভাবে নির্মাণ কার্যের নক্সা বুনন করেন তেমনই দক্ষতায় মাকড়সা নিঁখুত জ্যামিতিক সজ্জায় বানায় তাদের জাল। কিন্তু মানুষের তুলনায় অত ক্ষুদ্র মস্তিস্কে তা সম্ভব হয় কীভাবে? – তা ছিল অজ্ঞাত। কারেন্ট বায়োলজি তে নভেম্বরের গোড়াতেই প্রকাশিত হয়েছে মাকড়সার অতি সুনিপুণ ভাবে জাল তৈরির রহস্য।
জন হপকিন্সের বিহেভিয়ারাল বায়োলজিস্ট অ্যান্ড্রু গর্ডাস একদিন সন্তানের সঙ্গে পাখি দেখতে বেরিয়েছিলেন। তখনই হঠাৎ মাকড়সার জাল দেখে এত ক্ষুদ্র মস্তিস্কে এমন নয়নাভিরাম জাল তৈরির রহস্য খুঁজে বের করার কথা ভাবেন।
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো মাকড়সা কেবল স্পর্শের অনুভুতি দিয়েই অন্ধের মতোই জাল বানায়। তাও আবার রাতে। আলো ছাড়াই। তবে সব মাকড়সা কিন্তু পারে না।
গর্ডাসরা প্রথমে বুঝতে চান অত ক্ষুদ্র মস্তিস্কে মাকড়সা কীভাবে উচ্চ মানের নির্মাণ পরিকল্পনা পরিকল্পিত হয়। একেবারে ধাপে ধাপে গর্ডাসরা মাকড়সার কর্মদক্ষতা বিশ্লেষণ করতে চান। সমস্যা ছিল জালবোনা সম্পূর্ণ ভাবে রেকর্ড করাতে। গর্ডাসের দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম দিকের স্থানীয় মাকড়সা রাত্রে যখন জাল বানাবে সেই মুহুর্তটি ক্যামেরা বন্দি করার পরিকল্পনা করেন। সেই মতো বিশেষ ক্ষেত্র নির্মাণ হয় এবং ক্যামেরা ও আলোর বন্দোবস্ত হয়। ৬টি মাকড়সা প্রতিরাতে কীভাবে জাল প্রস্তুত করছে তা রেকর্ড করা হয়। তাতেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মুভমেন্ট নিখুঁত ভাবে বোঝা যায়। গবেষকরা দেখেন জাল প্রস্তুতির সময় প্রত্যেক মাকড়সার চলনে একটা মিল আছে। তাঁরা অনুমান করেন মাকড়সার জাল বানানোর মূল ছন্দ আসলে তাদের পায়ের অবস্থানের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। গর্ডাস বলেন, শেষ অবধি যদিও প্রতিটি জাল খানিক পৃথক পৃথক হয়, তবু বানানোর নিয়মটি এক। সে নিয়মটি মাকড়সার মস্তিস্কে এনকোড করা থাকে। এখন গর্ডাসরা জানতে চান কীভাবে মস্তিষ্কের নার্ভ সিস্টেমে ঐ নিয়ম এনকোড করা থাকে।