মাছ বাঁচাতে মাছের চামড়ায় জুতো, ব্যাগ!

মাছ বাঁচাতে মাছের চামড়ায় জুতো, ব্যাগ!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৮ জুন, ২০২২

মাছ বাঁচাতে মাছকেই মেরে তার চামড়া দিয়ে পণ্যদ্রব্য তৈরি করা! এই কাজের পথপ্রদর্শক
ডুবুরি আরভ ছাবরা। ফ্লোরিডার উপকূলে দীর্ঘদিন ধরে জলের নিচে তার বিচরণ। সেখানেই তার পর্যবেক্ষণ, ভয়ঙ্কর আগ্রাসী মাছ লায়নফিশের দৌরাত্মে চুড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাস্তুতন্ত্র। কোরাল ভরা ফ্লোরিডা সমুদ্রতটে জলের নীচে লায়নফিশের কোনো খাদক নেই। ফলে লাগামহীনভাবে কোরালসহ অন্যান্য জলজ জীবের ঠাঁই কাঁটায় মোড়া এই মাছের পেটে। প্রায় ৫ সপ্তাহের মধ্যেই কোরাল রিফের প্রায় ৭৯ শতাংশ জলজ প্রাণী খেয়ে ফেলেছিল রাক্ষুসে মাছের এই ঝাঁক। প্রমাদ গুনলেন ছাবরা। এভাবে চললে যে আর কিছুই থাকবে না।
তাঁর স্কুবা-ডাইভার বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ‘ইনভার্সা’। এর চালিকাশক্তি মূলত ছাবরা নিজে এবং তাঁর ছেলেবেলার বন্ধু রোল্যান্ড সালাতিনো। লায়নফিশ মাছ শিকার, তাকে মেরে তার চামড়াকে প্রথমে বিভিন্ন ড্রাইয়িং এজেন্টের সাহায্যে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়। তারপর তৈরি হয় নিত্যনতুন পণ্য। দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য নানা প্রোডাক্ট থেকে হালফিলের ফ্যাশন–কিছুই বাদ নেই। আশ্চর্যজনকভাবে, লায়নফিশের চামড়া তুলনামূলকভাবে অন্যান্য অনেক প্রাণীর চামড়ার চেয়ে বেশি টেঁকসই। এর কারণ, চামড়ায় রয়েছে জালের মতো ফাইবার। ছাবরার দাবি, একটি লায়নফিশের প্রাণের বিনিময়ে বাঁচবে প্রায় ৭০,০০০ সামুদ্রিক মাছ! তবে ‘ইনভার্সা’ নিজে সরাসরি এই নিধনযজ্ঞে সামিল নয়। সেই কাজটি করেন স্থানীয় মৎসশিকারীরা। লায়নফিশ শিকারে সময়, শ্রম দুটোই ব্যয় হয় অঢেল। কারণ জলের নীচে বিষাক্ত কাঁটা বাঁচিয়ে এই ভয়ঙ্কর মাছকে বাগে আনতে গেলে লাগে যথেষ্ট বিচক্ষণতা এবং অভিজ্ঞতা। কোরাল রিফ এবং অন্যান্য প্রজাতির মাছকে বাঁচানোর এই লড়াইতে মৎশিকারীদের খানিক আর্থিক ক্ষতির মুখই দেখতে হচ্ছে। তাঁরা লায়নফিশ বাদে অন্যান্য মাছের দিকে তেমন নজর দিতে পারছেন না।