মানুষের দীর্ঘায়ুর জন্য দায়ী জিনের খোঁজ পাওয়া গেল

মানুষের দীর্ঘায়ুর জন্য দায়ী জিনের খোঁজ পাওয়া গেল

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

 

রাতে ভালো ঘুম, নিয়মিত উপোস, ব্যায়াম, সবুজ শাকসবজি, কালো কফি, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন … ইত্যাদি নানা পরামর্শ। কেন এই পরামর্শ? সুস্থ শরীরে দীর্ঘ জীবন লাভ করার জন্য। কেন কিছু লোক অন্যদের চেয়ে বেশি দিন বাঁচে, কীভাবে আমরা দীর্ঘ জীবন লাভ করতে পারি তা নির্ধারণ করার জন্য বিভিন্ন দেশের গবেষকরা কাজ করে চলেছেন। তাদের কাজের লক্ষ হল মানুষের বয়সকালীন অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ করে আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলুলার এবং মলিকুলার মেডিসিন বিভাগের সেন্টার ফর হেলদি এজিং-এর গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন ওএসআর১ নামে পরিচিত এক বিশেষ প্রোটিনের সাথে দীর্ঘায়ুর সম্পর্ক রয়েছে। তারা এই প্রোটিনকে আয়ু বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই প্রো-দীর্ঘায়ু ফ্যাক্টর প্রোটিন বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে বিদ্যমান, যেমন ফলের মাছি, নেমাটোড, রেশম কীট ও মানুষ। গবেষণার শুরুতেই তারা মানুষ সহ অনেক জীবের মধ্যে বিদ্যমান সম্ভাব্য দীর্ঘায়ু প্রোটিনগুলো স্ক্রীন করেছেন। কারণ তারা মানুষের এজিং-এর জন্য সম্ভাব্য নতুন কৌশল ও ওষুধ আবিষ্কারের জন্য মানুষের দীর্ঘায়ু জিন শনাক্ত করতে চেয়েছিলেন। তারা এই প্রোটিন স্ক্রিন করে প্রাণীদের সাথে মানুষের কোহর্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছেন, এটা মানুষের ক্ষেত্রে ট্রান্সলেট করা যায় কিনা।
গবেষকরা একটা বড়ো প্রোটিনের গ্রুপ অধ্যয়ন করেন, যা ট্রান্সক্রিপশন ফ্যাক্টর ফক্সো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটা দীর্ঘায়ু নিয়ন্ত্রক অঞ্চল নামে পরিচিত। সেখান থেকে তারা ১০টা প্রোটিন শনাক্ত করেন, যাদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেন আয়ুর ক্ষেত্রে পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। এই ১০টা জিনের মধ্যে ওএসআর১ জিন সবচেয়ে কার্যকরী। একটা জিন সংক্ষিপ্ত জীবনকালের সাথে যুক্ত হলে অকাল বার্ধক্য এবং বয়স-সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মানুষের বার্ধক্য ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সামগ্রিক জ্ঞানের জন্য ওএসআর১ জিন কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে জ্ঞান থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এই গবেষণা দীর্ঘায়ুতে প্রথম ওএসআর১ এর ভূমিকা শনাক্ত করেছে। গবেষকরা আশাবাদী ভবিষ্যতে বয়স জনিত অসুখ, বৃদ্ধ হওয়াতে এই জিনের ভূমিকা তারা উন্মোচন করতে পারবেন।