মৌখিক স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে যোগসূত্র

মৌখিক স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে যোগসূত্র

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

জাপানে একটি নতুন গবেষণায় মৌখিক স্বাস্থ্য এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে; অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে এই দুটি আশ্চর্যজনকভাবে আন্তঃসংযুক্ত। গবেষণায় দেখা হয়েছে যে মুখের সমস্যা যেমন পিরিয়ডোনটাইটিস (মাড়ির রোগ) এবং দাঁত ক্ষয় অন্যান্য রোগ যেমন স্ট্রোক, অ্যালজাইমার্স এবং অন্যান্য ধরণের ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজঅর্ডারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে কিনা। ফলাফলগুলি থেকে পরিষ্কার, উভয় সমস্যাই হিপোক্যাম্পাসে দ্রুত অ্যাট্রোফির সাথে যুক্ত। হিপোক্যাম্পাস হল মস্তিষ্কের সেই অংশ যা স্মৃতি, শেখা এবং আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের অনুমান অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ১৯ শতাংশ গুরুতর পেরিওডন্টাল রোগ, রক্তপাত/ফোলা মাড়ি এবং দাঁতের সহায়ক কোশ, কলার ক্ষতিতে ভুগছেন। এর অর্থ হল ১ বিলিয়নেরও বেশি লোক তাদের মুখের অবস্থার কারণে প্রাথমিক জ্ঞানীয় হ্রাসের জন্য ঝুঁকিগ্রস্থ হতে পারে। আরও খারাপ হল , মুখ এবং মস্তিষ্কের মধ্যে প্রকৃতি দ্বিমুখী সম্পর্ক আছে, অর্থাৎ জ্ঞানীয় পতন মৌখিক স্বাস্থ্যের অবনতির অভ্যাসের দিকে পরিচালিত করে। অ্যালজাইমার্সের মতো স্নায়বিক ব্যাধিগুলি দাঁতের সঠিক যত্ন নেওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। জ্ঞানীয় ক্ষয়প্রাপ্ত ব্যক্তিরা ব্রাশ করতে ভুলে যেতে পারেন, অথবা দাঁতের ডাক্তারের কাছে রুটিন চেক আপের জন্য যেতে চান না।
ব্রাশিং, ফ্লসিং, দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়া এবং সম্ভাব্য সঠিক খাদ্যতালিকা বেছে নেওয়ার উপর জোর দিয়ে, বয়স্ক ব্যক্তিদের দাঁতের প্লেক এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করলে, নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের ঝুঁকি কমতে পারে। এইজন্য যে সমস্ত ব্যক্তির ডিমেনশিয়া সবে ধরা পড়েছে, তাদের যারা দেখভাল করেন, রোগীর দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখার বিষয়ে তাদের জোর দেওয়া দরকার। এই ধরনের ছোটো সরল জীবনযাত্রার পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে একটি বিশাল পার্থক্য আনতে পারে এবং সেগুলি দাঁতে পরবর্তী সময়ে হস্তক্ষেপের চেয়ে দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট সহজ। অ্যালজাইমার্সের মতো অবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলে শুধুমাত্র মৌখিক স্বাস্থ্যের বজায় রাখলেই চলবে না, অনেক কারণ ডিমেনশিয়ার জন্য অবদান রাখে। তবে প্রমাণ থেকে স্পষ্ট যে মৌখিক সুস্বাস্থ্য রক্ষা জ্ঞানীয় পতনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করতে পারে এবং এই বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 1 =