মৌমাছির সামাজিক দূরত্ব

মৌমাছির সামাজিক দূরত্ব

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ নভেম্বর, ২০২১

সামাজিক দূরত্ব- গত দুবছরে কথাটি রোজনামচার অঙ্গ হয়ে উঠেছে। এই প্রথম নয় যদিও, শতবর্ষ আগে স্প্যানিশ ফ্লুয়ের সময়ও সামাজিক দূরত্ব মানা ছিল রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার। তবে জানেন কি মানুষ ছাড়াও মৌমাছিরাও রোগের সাথে লড়াইয়ের পন্থা হিসেবে সামাজিক দূরত্বকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে?
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লণ্ডনের গবেষক আলেসান্দ্রো চিনি ও তার সহকর্মীদের এ সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি সায়েন্স অ্যাডভান্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। চিনিরা দেখেন, মৌচাকে ‘ভ্যারোয়া ডেসট্রাক্টর’ নামের একধরণের পরজীবি কীটের আক্রমণ ঘটে সময় সময়। তখনই মৌমাছির মধ্যে তথাকথিত ‘সামাজিক দূরত্ব’ মানে চলার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। গোড়াতে ইতালির সারদিনিয়ার মৌচাক পর্যবেক্ষণ করেন, এরপর নজর দেন প্রাকৃতিক ভাবেই পরজীবি কীটে আক্রান্ত মৌচাকে। শেষে সংক্রমণহীন মৌমাছিগুলোর আচরণ বিশ্লেষণ করেন। এবং গোটা প্রক্রিয়াটির জন্যে মৌচাকের ভিডিও রেকর্ড করা হয়।
ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় মৌচাকে ভ্যারোয়া ডেসট্রাক্টরের সংক্রমণ বেড়ে গেলে চাকের বয়স্ক মৌমাছিরা, যারা খাদ্য সংগ্রহ করে, তারা চাকের অন্য মৌমাছিদের খাদ্যের উৎস দেখিয়ে চাক থেকে বের করে আনে। চাকে থাকে কেবল রানী মাছি ও কিছু অল্প বয়স্ক মৌমাছি। উল্লেখ্য খাদ্যের খোঁজে থাকা মৌমাছিগুলোর থেকেই ভ্যারোয়ার সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকে। তাই ঐ মৌমাছিগুলো দূরে থাকলে চাকে সংক্রমণের সম্ভবনা কমে। এরপরে চিনিরা ১২টি কম বয়সী মৌমাছিকে কৃত্রিমভাবে সংক্রমিত করে না- সংক্রমিত মাছির সঙ্গে তুলনা করে দেখেন চাকে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব না হলেও মৌমাছিগুলোর মধ্যে শরীর পরিষ্কার করা বা গ্রুমিং- এর হার বেড়ে গেছে। এবং সংক্রমিত মাছিরা অসংক্রমিতদের চেয়ে অনেক বেশি যৌথ ভাবে খাদ্যভাগাভাগি করে খাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 5 =