পৃথিবীর বায়ো-ডাইভারসিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অবিরাম আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য। এই পরিবর্তনের মূল কারণ বিশ্বের ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ন। উদ্বিগ্ন সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ। এখন যে সম্মেলন চলছে, সমস্ত দেশের (ধনী দেশগুলোকে নিয়ে বিশেষত) শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তারা হাজির হচ্ছেন সেই সম্মেলনে। পৃথিবীর গরম কমাতে হাজার একটা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রত্যেক বছর ১০০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যাদের উপস্থিতিতে একটা বিশাল অঞ্চলের বায়ো-ডাইভারসিটি বজায় থাকে তারা সকলের, মানে রাষ্ট্রগুলোর চোখের সামনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। এর জ্বলন্ত উদাহরণ? সুন্দরবন এবং তার ম্যানগ্রোভ!
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ শুধু সুন্দরবনকে রক্ষা করে না, কলকাতা সহ, পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িষারও বায়ো-ডাইভারসিটি সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভের হাতে বজায় থাকে। সেই ম্যানগ্রোভ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে! প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে, একইসঙ্গে মানুষেরও হাতে বিলুপ্ত হচ্ছে। রাষ্ট্রপ্রধানরা শুধু ঘরে বসে ম্যানগ্রোভের বীজ বপন করার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন! সাম্প্রতিক এক গবেষণা জানাচ্ছে, শুধু বায়ো-ডাইভারসিটি নষ্ট হওয়া নয়, ম্যানগ্রোভ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের বিরল প্রজাতির প্রাণী আর উদ্ভিদও। গবেষকরা জানিয়েছেন, ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে অনেক রকমের বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া যেত, সেগুলোরও বিনাশ হচ্ছে। একইসঙ্গে শামুকজাতীয় অনেক বিরল প্রজাতির প্রাণীও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। গবেষণা জানাচ্ছে, সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষ তাঁদের জীবিকার জন্যও নদী উপকূলবর্তী অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ নষ্ট করছেন। চিংড়ি চাষ, অন্য মাছ চাষ, কাঁকড়ার চাষ– সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষের অন্যতম প্রধান জীবিকা এই কাজগুলো করে। সেই কারণে উপকূলেও বিপুল সংখ্যক ম্যানগ্রোভকে কেটে নষ্ট করতে হচ্ছে মানুষকে। নষ্ট হচ্ছে বায়ো-ডাইভারসিটি, বিলুপ্ত হচ্ছে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ আর প্রাণীকূল।