যত গণ্ডোগোল গ্লাসগোয়!

যত গণ্ডোগোল গ্লাসগোয়!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ নভেম্বর, ২০২১

গ্লাসগোয় সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ পরিচালিত ক্লাইমেট চেঞ্জিং সামিট-২৬ চুড়ান্ত দিনে পা রাখল শুক্রবার। দু’সপ্তাহ ধরে প্রায় ২০০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, পরিবেশ বাচাঁনোর জন্য রাস্তায় নামা আন্দোলনকারী-প্রত্যেকেই উপস্থিতিতে প্রাপ্তি কী? একটি বিতর্কিত খসড়া। জীবাশ্ম জ্বালানিকে বাতিল করে অজীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন করার অঙ্গীকার নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্লাইমেট কমিটি থেকে যে খসড়া রাখা হয়েছিল পৃথিবীর সমস্ত দেশের সইয়ের অপেক্ষায় সেখানে অঙ্গীকারের ‘ভাষা’ বদলে দেওয়া হয়েছে! লেখাটি আবার এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা জীবাশ্ম জ্বালানির বৃহত্তর উৎপাদক দেশগুলোর পক্ষে যায়! ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্লাইমেট পলিসির প্রধান ফ্রান্স টিমারমানস বৃহস্পতিবার অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে মন্তব্য করেছেন, “ভাষাটা যেভাবে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণকারী দেশগুলোর পক্ষে তৈরি করা হল সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকালে খুবই আশঙ্কাজনক!”
সামিট শুরুর সময় গ্রেটা থুনবার্গ ঠিকই বলেছিলেন। শুধু মিথ্যাভাষণ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যাবে না গ্লাসগো থেকে। দু’সপ্তাহের সামিট শেষে রাষ্ট্রপ্রধানরা সেই পুরনো প্রতিশ্রুতি আবার আওড়ে গেলেন! প্যারিস ক্লাইমেট সামিটে নেওয়া শপথকে বাস্তবায়িত করতেই হবে! মানে, বিশ্ব উষ্ণায়ন কিছুতেই ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে ওপরে উঠতে দেওয়া যাবে না! কিন্তু কীভাবে সেই কাজ হবে তা নিয়ে বিশ্বের উন্নত ও ধনী দেশগুলো পরিষ্কারভাবে কিছুই জানায়নি। এমনকী, গরিব দেশগুলোকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার যে আবেদন এবং প্রসঙ্গ একাধিকবার সভায় তোলা হয়েছে তা নিয়েও ধনী দেশগুলোর মুখে কুলুপ! তাই অরণ্যে রোদনের মত আফ্রিকার দেশগুলো, মলদ্বীপ, কলম্বিয়ার মত তথাকথিত গরিব দেশগুলো বারবার বলে গিয়েছে ২০৩০-এর মধ্যে যদি প্যারিস সামিটে এবং গ্লাসগোয় নেওয়া নতুন শপথকে বাস্তবায়িত করা না যায় তাহলে উষ্ণায়ন কিন্তু মহামারীর আকার ধারণ করবে! এই দেশগুলোর পাশে ছিল শুধু সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ।
আর ধনী দেশগুলো এই কথাগুলো শুনে হয়ত ভেবেছে অসহায়ের নিস্ফল আক্রোশ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + 2 =